Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

প্রেমিককে দিয়ে স্বামী হত্যায় ‘মৃত মায়ের’ ছদ্মবেশ, অতঃপর?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০১:১৬ এএম

প্রেমিককে দিয়ে স্বামী হত্যায় ‘মৃত মায়ের’ ছদ্মবেশ, অতঃপর?

সম্প্রতি ভারতের মিরাটে ঘটে যাওয়া এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নিহতের স্ত্রী মুসকান রাস্তোগী, যিনি তার প্রেমিক সাহিল শুক্লাকে এই খুনের কাজে প্ররোচিত করেন।

নিহতের নাম সৌরভ রাজপুত।যিনি ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা। গত ৪ মার্চ তাকে হত্যা করে তার দেহ টুকরো টুকরো করে সিমেন্টে মোড়ানো ড্রামে লুকিয়ে রাখা হয়।

ভয়ঙ্কর ছলচাতুরী: মৃত মায়ের ছদ্মবেশে পাঠাতেন স্ন্যাপচ্যাট মেসেজ!

পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল গত বছরের নভেম্বর থেকে। মুসকান এমন এক পরিকল্পনা করেন, যাতে সাহিল বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তার মৃত মা পুনর্জন্ম নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলছেন স্ন্যাপচ্যাটে!

একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মুসকান একটি নতুন স্ন্যাপচ্যাট অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তার প্রেমিক সাহিলকে এমনভাবে বার্তা পাঠাতে থাকেন, যাতে সাহিল বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তার মৃত মা-ই তার সঙ্গে কথা বলছেন। 

আর এই কৌশল দিয়েই ছলনাময়ী এই নারী সাহিলকে পুরোপুরি মানসিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে নিজের স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনায় টেনে আনেন।

পরিকল্পিত খুন: ওষুধ, ছুরি, ছুটি—সব ছিল ছকেবাঁধা

২২ ফেব্রুয়ারি, মুসকান ৮০০ টাকায় দুটি ছুরি কেনেন। দোকানদারকে বলেন, এগুলো দিয়ে তিনি মুরগি কাটবেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সৌরভ লন্ডন থেকে মেয়ের জন্মদিন উদযাপন করতে ভারতের মিরাঠে ফেরেন। ফেব্রুয়ারি ২৫ মুসকান তার মদের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মেশান, তবে সৌরভ সেটি খাননি।

অবশেষে ৪ মার্চ তাকে ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন মুসকান এবং সাহিলের সাহায্যে স্বামীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।

হত্যার পর কী করলেন মুসকান?

মুসকান তার স্বামীকে হত্যার পর সবার কাছে বলেন যে, তার স্বামী সৌরভ হিল স্টেশনে বেড়াতে গেছেন।আর খুনের পরপরই তিনি প্রেমিক সাহিলকে নিয়ে মানালি ঘুরতে যান।

সবার সন্দেহ দূর করতে সৌরভের ফোন থেকে ছবিও আপলোড করেন মুসকান, মএনকি তার পরিবারের সঙ্গে চ্যাটও করেন।

কিন্তু পরিকল্পনা ভেস্তে গেল কীভাবে?

সৌরভের পরিবার প্রথমে খুব একটা সন্দেহ করেনি। কারণ বিয়ের পর থেকেই তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না। তবে দীর্ঘ সময় সৌরভ কোনো ফোন কল ধরছিল না দেখে পরিবারের সন্দেহ হয় এবং তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়।

পুলিশি তদন্ত শুরু হতেই মানালি থেকে ফেরার পর মুসকান তার বাবা-মায়ের সামনেই হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর পুলিশ মুসকান ও সাহিলকে গ্রেফতার করে।

ড্রাগ আসক্তি ও ভয়ংকর অপরাধচক্র

পুলিশ সাহিলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নেশাদ্রব্যের বিভিন্ন চিহ্ন ও শয়তানের ছবি আঁকা দেয়াল আবিষ্কার করেছে।

এই নির্মম হত্যাকাণ্ড মিরাঠের সাধারণ মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। তদন্ত চলছে, তবে ইতোমধ্যেই এটি ভারতের অন্যতম ভয়ঙ্কর পরিকল্পিত হত্যার কেস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।সূত্র: এনডিটিভি

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম