তসলিমা নাসরিনকে পশ্চিমবঙ্গে ফেরানোর দাবি

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৬ পিএম

ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে দেশটির পশ্চিমবঙ্গে ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন বিজেপির সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। রাজ্যসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি তসলিমাকে পশ্চিমবঙ্গে ফেরানোর আবেদন করেন।
সোমবার রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে বক্তৃতা করার সময় বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য তসলিমাকে কলকাতায় ফেরানোর আবেদন করেন।
তিনি বলেন, সাহিত্যিককে কলকাতা শহরে থাকার অনুমতি দিক সরকার। তিনি আরও বলেন, তদানীন্তন কিছু কংগ্রেস নেতাদের প্ররোচনায় কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তসলিমা। সেই নেতারা এখন পশ্চিমবঙ্গে শাসক দলের মাথা।
২০০৭ সালে কলকাতায় তাকে নিয়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় শহর ছাড়তে হয়েছিল এই সাহিত্যিককে। তারপর কেটে গেছে ১৮ বছর।
নিজের বক্তব্যে তৎকালীন বাম সরকারেরও সমালোচনা করতে ছাড়েননি শমীক। অন্যান্য নারীবাদী বিষয়ে সোচ্চার হলেও তসলিমার ক্ষেত্রে তারা মৌন কেন সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
রাজ্যসভায় শমীকের এই বক্তব্যে স্বভাবতই খুশি তসলিমা। মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলার জন্য নিজের ফেসবুকে শমীককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বাম সংসদ সদস্য গুরুদাস দাশগুপ্তের কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, তারপর আর কেউ তার হয়ে কথা বলেননি। বর্তমান রাজ্য সরকার তার লেখা মেগা সিরিয়াল বন্ধ করে দেয় বলে দাবি করেন তিনি।
তৃণমূলের সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। তারপরে সব কিছু।
সিপিএম অবশ্য শমীকের এই বক্তব্যে ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে ধর্মীয় মেরুকরণের ইঙ্গিত দেখছে। সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি এবং তৃণমূল একে অন্যের পরিপূরক হয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজেপি ২০১৪ থেকে সরকার চালাচ্ছে। এতদিনেও কেন তসলিমাকে স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া হলো না?
১৯৯৪ সালে লজ্জা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত তসলিমা। দীর্ঘদিন কলকাতায় থাকলেও ২০০৭ সালে তার বই দ্বিখণ্ডিত নিয়ে শহরে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তার সুরক্ষার জন্য তাকে শহর ছাড়তে বলা হয়।
এরপর পুলিশি নিরাপত্তায় দিল্লি এবং জয়পুরে কাটিয়ে ভারত ছেড়ে ইউরোপে থাকতে শুরু করেন তিনি। পরে দিল্লিতে ফিরে আসেন তিনি। এখন সেখানেই বসবাস করেন তসলিমা।