ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠাতে মরিয়া ফ্রান্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:০১ পিএম

বরাবরই ইউক্রেনের পাশে থেকেছে ইউরোপ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবার ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠাতে মরিয়া ফ্রান্স। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বলেছেন, ‘রাশিয়ার সম্মতি ছাড়াই আমরা ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠাবো। যদি ইউক্রেন মিত্র বাহিনীকে তার ভূখণ্ডে থাকতে বলে তাহলে তা গ্রহণ করা বা না করা রাশিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে না।’
স্থানীয় সময় শনিবার রাতে এ কথা বলেন ম্যাঁক্রো। এ ছাড়া ব্রিটেন ও তুরস্কসহ অন্যান্য ন্যাটো দেশগুলোও জানিয়েছে, তারা যুদ্ধপরবর্তী ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী সেনা পাঠাতে ইচ্ছুক। তাস।
ইউক্রেনের সমর্থনে বেসামরিকদের একত্রিত করার পরিকল্পনাও করেছেন ম্যাঁক্রো। রুশ আগ্রাসনের মুখে বেসামরিকদের একত্রিত করতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন তিনি। এ কাজে তরুণ ফরাসিদের উৎসাহিত করার উপায় খুঁজছেন ম্যাঁক্রো।
এর আগে জানুয়ারিতে, কীভাবে সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন করার জন্য আরও তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের একত্রিত করা যায় সে বিষয়ে সরকার ও সেনাবাহিনীকে একটি প্রস্তাব জমা দিতে বলেছিলেন তিনি। এদিকে ইউক্রেনে সম্ভাব্য সেনা, জাহাজ এবং বিমান মোতায়েনের জন্য ২৭ দেশের জেনারেলরা এই সপ্তাহে লন্ডনে জড়ো হবেন বলে বলে জানা গেছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, নেতৃত্বমূলক ভূমিকা পালন করতে সেনা এবং বিমান মোতায়েন করতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া। রোববার ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ কীভাবে শেষ করা যায় তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় বসেছে দেশ দুটি।
পালটাপালটি ব্যাপক ড্রোন হামলা: পালটাপালটি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠেছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। রুশ হামলায় ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, কিয়েভের ড্রোন হামলার পর রাশিয়ার এক তেল শোধনাগারে আগুন ধরে যায়।
রোববার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই পক্ষই পালটাপালটি বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। ফলে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শনিবার রাশিয়া ১৭৮টি ড্রোন ও দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে ১৩০টি ড্রোন ইউক্রেন ভ‚পাতিত করেছে, তবে বেশ কয়েকটি ড্রোন বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। ইউক্রেনের দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক ও ওডেসা অঞ্চলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির এক বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি। কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, দ্রুত তা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনও পালটা হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার পর একটি তেল শোধনাগারে আগুন ধরে যায়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০০ জনের বেশি দমকল কর্মী কাজ করেছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই চলছে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন দূতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন পুতিন।
তিনি জানিয়েছেন, কিছু শর্ত পরিষ্কার করা হলে মস্কো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অভিযোগ, রাশিয়া শুধু সময়ক্ষেপণ করছে এবং আরও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে চাইছে। তিনি বলেন, যদি রাশিয়া এই প্রস্তাবে রাজি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কঠোর ও সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসবে।