চীন-রাশিয়ার আহ্বান: ইরানের ওপর ‘অবৈধ নিষেধাজ্ঞা’ প্রত্যাহার করা হোক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
-67d53eb4b2a79.jpg)
চীন ও রাশিয়ার কূটনীতিকরা ইরানের ওপর আরোপিত ‘অবৈধ নিষেধাজ্ঞা’ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন এবং তেহরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
বেইজিংয়ে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকের পর এই বিবৃতি আসে, যেখানে তিন দেশের কর্মকর্তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত আলোচনায় চীন, রাশিয়া ও ইরানের কূটনীতিকরা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতবিনিময় করেন।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘সমস্ত অবৈধ, একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’
বৈঠকটি চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাওসু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি ও রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ অংশ নেন।
আলোচনাটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছেন।
চীন, রাশিয়া ও ইরান জোর দিয়ে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর উচিত নিষেধাজ্ঞা, চাপ বা শক্তি ব্যবহারের হুমকির পরিবর্তে উত্তেজনার মূল কারণগুলো সমাধানে মনোযোগী হওয়া।
তারা উল্লেখ করেন যে, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে’ সংলাপই একমাত্র গ্রহণযোগ্য সমাধান এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে এমন কোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান, যা উত্তেজনা বাড়াতে পারে বা কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।
বেইজিং ও মস্কো তেহরানের এই প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে নিবেদিত এবং তা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত নয়।
তারা আরও উল্লেখ করেন, ইরান পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি ও আন্তর্জাতিক পরিদর্শন চুক্তির আওতায় তার দায়িত্ব পালন করছে এবং তার শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকারকে ‘সম্পূর্ণরূপে’ সম্মান করা উচিত।
ইরান বহুদিন ধরেই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়ে আসছে, যা তার পারমাণবিক কর্মসূচি ও অন্যান্য বিষয়ে আরোপিত হয়েছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাগুলো বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে নতুন মার্কিন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তারা এই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেছে এবং ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির আওতায় ইরানের বিরুদ্ধে হাইব্রিড যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাগুলোর আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি নিশ্চিত করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি চিঠি ইরান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
বৃহস্পতিবার আরাগচি বলেন, ইরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো আলোচনা করবে না, যদি না সেই আলোচনা চাপ বা হুমকি ছাড়াই হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরান ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তবে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে এই চুক্তি থেকে সরে গিয়ে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে, যা চুক্তির ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেয়।