
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০০ এএম
নাসার প্রধান বিজ্ঞানী বরখাস্ত, আরও ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিল ট্রাম্প প্রশাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ০২:২০ পিএম
-67d143b189f92.jpg)
আরও পড়ুন
নাসা মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানীসহ আরও কয়েকজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণাকে দুর্বল করার ধারাবাহিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন।
এই সিদ্ধান্তে আপাতত ২৩ জন কর্মী আক্রান্ত হলেও, আরও ছাঁটাই আসছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সংস্থার এক মুখপাত্র।
বুধবার (১২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রথম দফায় নাসার প্রধান বিজ্ঞানীর অফিস বাতিল করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিশিষ্ট জলবায়ুবিদ ক্যাথরিন ক্যালভিন। তিনি জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন এবং গত মাসে চীনে আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু বিজ্ঞান সম্মেলনে অংশ নিতে তাকে এবং অন্যান্য মার্কিন প্রতিনিধিদের নিষিদ্ধ করা হয়।
নাসার মুখপাত্র শেরিল ওয়ার্নার এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের কর্মীবাহিনীকে যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য এবং নির্বাহী আদেশের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে নাসা ধাপে ধাপে কর্মী ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা ‘রিডাকশন ইন ফোর্স’ (আরইএফ) নামে পরিচিত।
তিনি আরও বলেন, ‘১০ মার্চ কিছু কর্মীদের জানানো হয়েছে যে তারা নাসার এই ছাঁটাই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। যদি তারা যোগ্য হন, তাহলে ‘ভলান্টারি আর্লি রিটায়ারমেন্ট অথরিটি’ (ভিইআরএ) এর আওতায় স্বেচ্ছায় অবসর নিতে পারবেন অথবা আরইএফ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।’
এছাড়া, নাসার ‘অফিস অব টেকনোলজি, পলিসি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি’ এবং ‘ডাইভারসিটি, ইকুইটি, ইনক্লুশন ও অ্যাক্সেসিবিলিটি ব্রাঞ্চ’-কেও বাতিল করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত অন্যান্য সংস্থার তুলনায় নাসায় তেমন বড় ধরনের ছাঁটাই হয়নি, যা নাসার নতুন প্রধান হিসেবে ট্রাম্প মনোনীত জ্যারেড আইজ্যাকম্যানের শেষ মুহূর্তের হস্তক্ষেপের কারণে সম্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ই-পেমেন্ট ব্যবসায়ী এবং স্পেসএক্স-এর গ্রাহক আইজ্যাকম্যান ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং কেন্দ্রীয় ব্যয়ের সংকোচন নীতির অন্যতম নেপথ্য কারিগর ইলন মাস্কের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়।
ফেব্রুয়ারিতে নাসা প্রায় এক হাজার অস্থায়ী কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছিল। তবে, প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট আর্স টেকনিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, আইজ্যাকম্যান এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেন, যদিও নাসা আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।
নাসা ওয়াচে প্রকাশিত একটি অভ্যন্তরীণ মেমোর তথ্য অনুযায়ী, এই নতুন ছাঁটাইয়ের ফলে সংস্থাটির গবেষণা কার্যক্রম কমে গিয়ে মহাকাশ অনুসন্ধানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে।
ট্রাম্প ও মাস্ক দুজনই মানুষের মঙ্গল অভিযানের পক্ষে। গত সপ্তাহে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ‘আমরা মার্কিন পতাকা মঙ্গলে এবং আরও দূর মহাকাশে স্থাপন করব’ ।
নাসা জলবায়ু গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী উপগ্রহ পরিচালনা, আকাশ ও ভূমিভিত্তিক গবেষণা, উন্নত জলবায়ু মডেল তৈরি এবং গবেষক ও সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
তবে জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রতারণা বলে অভিহিত করা ট্রাম্প ইতোমধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করেছেন।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন দেশের অন্যতম প্রধান জলবায়ু সংস্থা, ‘ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ এর শত শত কর্মী বরখাস্ত করেছে এবং সেখানে আরও ছাঁটাই আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।