পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা
১৫৫ জিম্মিকে উদ্ধার, যা বলছেন ফিরে আসা যাত্রীরা

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ট্রেনে জঙ্গিদের হাতে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময় অভিযানে নিহত জঙ্গিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, সর্বশেষ জঙ্গিকে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচিস্তানের বোলান জেলায় হামলার শিকার জাফর এক্সপ্রেসে থাকা ১৫৫ জন জিম্মিকে সফলভাবে মুক্ত করেছে এবং ২৭ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। এছাড়া শেষ জঙ্গিকে পরাজিত না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
তবে ট্রেনটিতে ঠিক কত সংখ্যক সশস্ত্র জঙ্গি অবস্থান করছে তা এখনও অজানা। নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, অবশিষ্ট জিম্মিদের উদ্ধারের জন্য নিরাপত্তা সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে যে শতাধিক যাত্রী জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জিম্মি থাকাকালে তাদের ‘ভয়াবহ অভিজ্ঞতা’ হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন কেউ কেউ।
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন মুহাম্মদ বিলাল বলেন, আমরা যে কীভাবে পালিয়ে এসেছি, সেটা বর্ণনা করার মতো ভাষা আমার জানা নেই। এই অভিজ্ঞতা ভয়াবহ।
আরেক যাত্রী আল্লাদিত্তা জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
৪৯ বছর বয়সী এই যাত্রী বলছিলেন যে, আক্রমণকারীরা যখন ট্রেনে হামলা চালিয়েছিল তখন যাত্রীরা ‘আতঙ্কে সিটের নিচে লুকাতে শুরু করেছিলেন’।
অন্যদিকে, এখনও যারা হামলাকারীদের হাতে জিম্মি রয়েছেন, তাদের আত্মীয়-স্বজনরা উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সঙ্গে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
এমনই একজন ব্যক্তি বিবিসিকে জানিয়েছে যে, যার শ্যালক এখনও ট্রেনে জিম্মি রয়েছেন। শ্যালকের ব্যাপারে খোঁজ নিতে অনেক দূর থেকে তিনি ছুটে এসেছেন।
কিন্তু অনেক জায়গায় রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়ি চালিয়ে আসতে তাকে ব্যাপক ঝামেলা পেতে হয়েছে।
জিম্মি যাত্রীদের উদ্বিগ্ন স্বজনরা এখন কোয়েটা রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টার থেকে তাদের প্রিয়জনদের তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
জিম্মি এক যাত্রীর ছেলে মুহাম্মদ আশরাফ বিবিসি উর্দুকে বলেছেন যে, অনেকক্ষণ চেষ্টার পরও তিনি তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।
তার বাবা মঙ্গলবার সকালে কোয়েটা থেকে লাহোরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।
জিম্মি আরেক যাত্রীর আত্মীয় ইমরান খান জানিয়েছেন, ছোট বাচ্চাকে নিয়ে তার চাচাতো ভাই কোয়েটা থেকে মুলতান যাচ্ছিলেন। পথে এ ঘটনা ঘটায় তার পরিবারের সবাই এখন খুবই উদ্বিগ্ন।
‘কেউ আমাকে বলছে না যে ঠিক কী চলছে বা তারা নিরাপদ কি-না’ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলছিলেন ইমরান খান।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, ট্রেনটি এখন যেখানে আটকে রয়েছে, সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট কোনোটাই পাওয়া যায় না।
ফলে ট্রেনে আটকে থাকা জিম্মিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান কর্মকর্তারা।