Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে জিম্মি ট্রেন: যাত্রীদের পরিণতি অজানা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম

পাকিস্তানে জিম্মি ট্রেন: যাত্রীদের পরিণতি অজানা

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান এলাকায় ‘জাফর এক্সপ্রেসে’ তীব্র গুলিবর্ষণের খবরের পর উদ্ধার দল পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, ট্রেনটিতে অন্তত ৫০০ যাত্রী রয়েছে। এদের মধ্যে শতাধিক যাত্রীকে জিম্মি করা হয়েছে। তবে তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখন অজানা। 

পাকিস্তান রেলওয়ে কন্ট্রোলার মুহাম্মদ কাশিফ জানিয়েছেন, সশস্ত্র ব্যক্তিরা একটি টানেলে ট্রেনটি আটকে দিয়েছেন। যাত্রী ও কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলছে।

এদিকে নিরাপত্তাবাহিনী জানিয়েছে, তারা টানেলের কাছে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন এবং হামলাকারীদের সঙ্গে তাদের গুলি বিনিময় হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। 

ইতোমধ্যে এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বিচ্চিন্নতাবাদী স্বশস্ত্রগোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছেন।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোয়েটা সিভিল হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং অ্যাম্বুলেন্স ও নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। 

তবে বেলুচ সরকারের মুখপাত্র শহিদ রিন্দ বলেছেন, দুর্গম পাহাড়ি পথের কারণে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সমস্যার মুখে পড়ছে। 

রেলওয়ে বিভাগও জানিয়েছে, উদ্ধারের জন্য আরও ট্রেন পাঠানো হয়েছে।

সরকারের মুখপাত্র জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

পেশোয়ার রেলওয়ে স্টেশনের জরুরি কাউন্টারের ইনচার্জ তারিক মাহমুদ জানিয়েছেন, ট্রেনে চারজন সরকারি কর্মকর্তাসহ পেশোয়ার ও পাঞ্জাবের যাত্রীরা রয়েছেন।

জাফর এক্সপ্রেস কোয়েটা থেকে ছাড়ার পর বিভিন্ন প্রদেশের এলাকা পার হয়ে ৩৪ ঘণ্টায় পেশোয়ার পৌঁছে। বেশিরভাগ যাত্রী পাঞ্জাবের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রেনে ওঠেন।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন,  নিরীহ যাত্রীদের ওপর যারা গুলি চালায়, তারা কোনো রকম সহানুভূতির যোগ্য নয়।

তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আমাদের পুরো মনোযোগ এ ধরনের হামলার প্রতিরোধে নিবদ্ধ করা উচিত।

সিন্ধু প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লানজারও এ ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্রবিরোধী ও সমাজবিরোধীদের জঘন্য পরিকল্পনা কখনো সফল হতে দেওয়া হবে না। সিন্ধু সরকার বেলুচিস্তান সরকারের পাশে রয়েছে।

প্রাদেশিক পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি এ ঘটনাকে ‘জঘন্য ও কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, এটি এমন একটি বিষয় যেখানে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সম্পূর্ণ মনোযোগ প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসে পাকিস্তান রেলওয়ে কোয়েটা-পেশোয়ার ট্রেন পরিষেবা পুনরায় চালু হয়। এর আগে এটি দেড় মাসের বেশি সময় বন্ধ ছিল।

বেলুচিস্তানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে।

২০২৪ সালের নভেম্বরে কোয়েটা রেলওয়ে স্টেশনে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও ৬২ জন আহত হয়েছিল।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজের জানুয়ারি মাসের নিরাপত্তা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ২০১৪ সালের নিরাপত্তা পরিস্থিতির সমতুল্য ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও ২০১৪ সালের মতো সন্ত্রাসীরা এখন আর পাকিস্তানের নির্দিষ্ট অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তবে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম