Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

কুর্দি-নেতৃত্বাধীন এসডিএফের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি সিরিয়ার

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৯ এএম

কুর্দি-নেতৃত্বাধীন এসডিএফের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি সিরিয়ার

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ও এসডিএফের প্রধান মাজলুম আবদি। ছবি: সংগৃহীত

কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত করার জন্য একটি চুক্তি পৌঁছেছে সিরিয়া।  দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা সোমবার (১০ মার্চ) এ ঘোষণা দেন। 

এছাড়া আহমেদ আল-শারা এবং এসডিএফের প্রধান মাজলুম আবদির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। 

এই চুক্তিতে সিরিয়ার ঐক্যের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং শর্ত দেওয়া হয়েছে যে ‘উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার সকল বেসামরিক ও সামরিক প্রতিষ্ঠান- সীমান্ত ক্রসিং, বিমানবন্দর এবং তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র’ সিরিয়া প্রশাসনের সঙ্গে একীভূত করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এসডিএফ ২০১৫ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার একটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে,  অঞ্চলটি সিরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসবে।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে আলজাজিরার রেসুল সেরদার বলেছেন, গত বছরের ডিসেম্বরে আল-শারার নেতৃত্বাধীন বাহিনীর নেতৃত্বে বাশার আল-আসাদের পতনের পর এই চুক্তিটি দেশের সবচেয়ে বড় অগ্রগতিগুলোর মধ্যে একটি। 

সেরদার বলেন, ‘সিরিয়া একক ভূখণ্ড হিসেবে থাকবে নাকি বিভক্ত হবে, তা সবসময়ই একটি জটিল বিষয় ছিল। ’

কুর্দিদের অধিকার

চুক্তিতে সিরিয়াজুড়ে যুদ্ধবিরতি এবং আসাদপন্থি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এসডিএফের সমর্থন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  এতে এটিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যে, কুর্দি জনগণ সিরিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তাদের নাগরিকত্বের অধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে। 

আলজাজিরার সেরদার বলেছেন, এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের সঠিক সাংবিধানিক অবস্থা কী হবে এবং এতে কোনও স্বায়ত্তশাসন বজায় থাকবে কি না তা স্পষ্ট নয়। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সিরিয়ার মতো বহুজাতিক এবং ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে এখন অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোকেও বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি উঠতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘একবার একটি নির্দিষ্ট জাতি বা সম্প্রদায়কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার পরে এখন দামেস্কের জন্য প্রশ্ন হলো যে, আলাওয়াইতস বা ড্রুজের মতো অন্যান্য সম্প্রদায়ও কী তাদের বিশেষ মর্যাদা পাবে?’

আল-আসাদের পতনের পর থেকে এসডিএফ-এর সিরীয় রাষ্ট্রে একীভূতকরণ নিয়ে আলোচনা চলছিল। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া বিভাজনের ফলে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। অন্যান্য বিরোধী শক্তির তুলনায় আল-আসাদের প্রতি এসডিএফের অবস্থান আরও অস্পষ্ট ছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে মিত্রতার অভিযোগও উঠেছিল। 

এদিকে এসডিএফ-যার নেতৃত্ব ধর্মনিরপেক্ষ এবং কুর্দি জাতীয়তাবাদী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-এর সঙ্গে জড়িত বারবার তুরস্ক-সমর্থিত সিরীয় যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে এবং তুর্কিদের কাছ থেকেও আক্রমণের শিকার হয়েছে। 

পিকেকে ১৯৮৪ সাল থেকে তুর্কি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি তুরস্কও এই গোষ্ঠীটিকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র এসডিএফকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে। মূলত আইএসআইএল (আইএসআইএস) বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এর কার্যকারিতার কারণে। প্রসঙ্গত, এর আগে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কিছু অংশ আইএসআইএল-এর নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং ২০১৯ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের হাতে পরাজিত হয়, যার মধ্যে এসডিএফও ছিল।

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে ওয়াশিংটন সিরিয়া ইস্যু থেকে প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে বলে জানা গেছে।  চলতি বছরের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘সিরিয়া নিজেই এখন গোলমালে হয়ে আছে। সেখানে তারা যথেষ্ট ঝামেলা করেছে। এর সবকিছুতে আমাদের জড়ানোর দরকার নেই। ’

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পিকেকে-র কারাবন্দি প্রধান আবদুল্লাহ ওকালান তার দলের প্রতি অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান, যা এসডিএফের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

তথ্যসূত্র: আলজাজিরা

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম