‘রাজনৈতিক বহিরাগত’ কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী, কে এই মার্ক কার্নি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। লিবারেল পার্টির পরবর্তী নেতা এবং কানাডার ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্ক কার্নির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
রোববার (৯ মার্চ) রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি মার্ক কার্নিকে নতুন দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। আর নিয়ম অনুযায়ী এখন তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রীও হবেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ট্রুডো তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
গত ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রিত্ব ও দলীয় প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি ২০১৫ সালে প্রথম দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু সম্প্রতি তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। এমন সময়ই তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন।
মার্ক কার্নি লিবারেল পার্টির নেতা হওয়ার দৌড়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়েছিলেন। মোট ভোটের প্রায় ৮৫.৯ শতাংশ এটা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট, কারিনা গোল্ড পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৮৫ ভোট এবং ফ্রাঙ্ক বেলিস পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৮ ভোট।
লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা মার্ককে জয়ী ঘোষণা করেন এই ভোটাভুটিতে।
লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে আগে থেকেই এগিয়ে ছিলেন কার্নি।
মার্ক কার্নি তার উদ্বোধনী বক্তব্যে কানাডাকে ‘শক্তিশালী’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্রেতিয়েনের বক্তৃতার উল্লেখ করে বলেন, তিনি তার পরিবারকে উদারপন্থি লিবারেল হতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
কার্নি বলেছেন, তার বাবা ১৯৮০-এর দশকে আলবার্টায় লিবারেল প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আপনি (ক্রেতিয়েন) বছরের পর বছর ধরে আমাকে আর্থিক দায়বদ্ধতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের ঐতিহ্যে অনুপ্রাণিত করেছেন।’
তিনি দাবি করেন, তার নতুন সরকার একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
এদিকে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির বিষয়ে কার্নি বলেন, ‘আমরা তাকে (ট্রাম্প) সফল হতে দিতে পারি না এবং করবও না।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যতক্ষণ না মুক্ত ও ন্যায্য বাণিজ্যের বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য প্রতিশ্রুতি দিতে পারছে, যতক্ষণ না তারা কানাডার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পাল্টা ব্যবস্থা (শুল্ক) বহাল থাকবে।’
তার কথায়, ‘আমেরিকা কানাডা নয়। কানাডা কোনোভাবেই আমেরিকার অংশ হবে না।’
৫৯ বছর বয়সি কার্নি, ‘রাজনৈতিক বহিরাগত’। কার্নি প্রত্যন্ত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলগুলির ফোর্ট স্মিথে জন্মগ্রহণ করেন এবং হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেছেন। সেই সময় তিনি বেশ ভালো আইস হকি খেলতেন। তিনি নিজের কর্মজীবে গোল্ডম্যান শ্যাকসে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের সময় কানাডাকে বিপর্যয় এড়াতে সাহায্য করেছিলেন তিনি।
তিনি ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংক অব কানাডার অষ্টম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আর্থিক স্থিতিশীলতা বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন।