Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

শঙ্কিত সহপাঠীরা

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি ছাত্রকে গ্রেফতার করল মার্কিন কর্তৃপক্ষ

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯:০০ এএম

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি ছাত্রকে গ্রেফতার করল মার্কিন কর্তৃপক্ষ

গত অক্টোবরে নিউ ইয়র্ক সিটির কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি একটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের অন্যতম নেতৃস্থানীয় এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের এজেন্টরা।  গ্রেফতার হওয়া ছাত্র মাহমুদ খলিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স-এর স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী। 

রোববার (৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জেরুসালেম পোস্ট।

তিনি গত বছর ক্যাম্পাসে হওয়া ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের প্রধান সংগঠকদের একজন ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। তার গ্রেফতারকে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।  

রোববার তার চারজন সহপাঠী জানিয়েছেন, শনিবার খালিলকে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন থেকে মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা দপ্তরের (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি – ডিএইচএস) এজেন্টরা গ্রেফতার করেছে। তার সহপাঠী মরিয়ম আলওয়ান এবং আরও তিনজন শিক্ষার্থী, যারা নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ করেননি, জানান যে খালিলকে টার্গেট করা হচ্ছিল কারণ তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং কোলাম্বিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের অন্যতম মুখপাত্র ছিলেন।  

প্রবাসী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করছে ট্রাম্প প্রশাসন?  

ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে যুক্ত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করবে। খলিলের গ্রেফতার সেই নীতির বাস্তবায়নের প্রথম দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।  

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলে হামলা এবং তার পরবর্তী ইসরাইলি সামরিক অভিযানের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের ঢেউ ওঠে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সেই আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র।  

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে তারা কোনও শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করতে পারেন না।  

এদিকে, ডিএইচএস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।  

কলাম্বিয়ার সরকারি চুক্তি বাতিল করল ট্রাম্প প্রশাসন  

শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, তারা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের সরকারি চুক্তি ও অনুদান বাতিল করেছে। প্রশাসনের দাবি, ক্যাম্পাসে ও আশেপাশে ঘটে চলা ইহুদিবিদ্বেষের হয়রানির কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।  

গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা আগে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খলিল বলেছিলেন, তিনি মনে করছেন সরকার ও কিছু রক্ষণশীল ইসরাইলপন্থি গোষ্ঠী তাকে টার্গেট করছে কারণ তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন।  

তিনি বলেন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে দুইবার পুলিশ ডেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করিয়েছে, অনেককে বহিষ্কার করেছে, কিন্তু তাতেও সরকারের রোষ থামেনি। স্পষ্টতই ট্রাম্প প্রশাসন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে তাদের বৃহত্তর রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করছে।  

‘এটা শুধু শুরু’— শঙ্কিত সহপাঠীরা  

খলিলের সহপাঠী মরিয়ম আলওয়ান বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা হরণ করছে।  

তিনি বলেন, আমার প্রিয় বন্ধু মাহমুদের জন্য আমি আতঙ্কিত। তিনি একজন বৈধভাবে বসবাসরত ব্যক্তি। আমি আরও আতঙ্কিত এই ভেবে যে, এটি কেবল শুরু।  

ছাত্রদের দাবি, খলিলের স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাকে কেন আটক করা হয়েছে, সেটি স্পষ্ট নয়।  রোববার পর্যন্ত তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম