সিরিয়ায়
সহিংসতা বন্ধ করে শান্তি -সংহতির আহ্বান প্রেসিডেন্ট আল-শারার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম

সিরিয়ায় চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা বন্ধ করে শান্তি ও সংহতির আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। দেশটির লাতাকিয়া ও তারতুসে চলমান সংঘর্ষে ইতোমধ্যেই এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
গত ৬ মার্চ সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বাশার আল-আসাদের অনুগতরা একযোগে আক্রমণ চালালে রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষ-সহিংসতা শুরু হয়। এরপর প্রতিরোধমূলক প্রতিক্রিয়ায় সরকারপন্থি হাজারো যোদ্ধা উপকূলীয় এলাকাগুলোতে পৌঁছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (SOHR) তথ্যমতে, চলমান সংঘর্ষে— লাতাকিয়া ও তারতুসে ৭৪৫ জন আলাওয়ি বেসামরিক নাগরিক, সরকারি বাহিনীর ১২৫ জন সদস্য এবং আসাদ অনুগত ১৪৮ জন যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ১,০১৮ জন নিহত হয়েছেন।
প্রেসিডেন্টের আহ্বান ও সরকারি প্রতিক্রিয়া
এমন প্রেক্ষাপটে রোববার সকালে রাজধানী দামেস্কের মাজ্জা মসজিদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সংহতি ও অভ্যন্তরীণ শান্তি রক্ষা করা উচিত। আমরা সবাই একসঙ্গে থাকতে পারি’।
তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। যা ঘটছে, তা প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের মধ্যেই পড়ে’।
একই সঙ্গে, ‘বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালালে দায়ীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে’ বলেও উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট।
বর্তমান পরিস্থিতি: নতুন মোড় নিচ্ছে সংঘর্ষ
এদিকে সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, তারতুসের বেতানিতার আশপাশে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। সূত্র জানায়, বাশার আল-আসাদপন্থি কিছু যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের সমর্থকরা পালিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিনিধি রেসুল সারদার দামেস্ক থেকে জানিয়েছেন, ‘সংঘর্ষ কিছুটা কমলেও গত চারদিনের ঘটনা বিশ্লেষণ করা কঠিন। কারণ এখনো বহু মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ার নতুন মন্ত্রিসভায় আলাওয়ি, কুর্দি, তুর্কমেন, আরব, সুন্নি, শিয়া, মুসলিম ও খ্রিস্টান প্রতিনিধিত্ব আছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’।
দক্ষিণ সিরিয়ায় ইন্টারনেট ও টেলিকম ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
এদিকে রোববার দারআ এবং সুয়েইদা প্রদেশের মধ্যে সংযোগকারী অপটিক্যাল ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই অঞ্চলে ইন্টারনেট ও টেলিকম সেবা বন্ধ হয়ে গেছে।
দারআ টেলিকম শাখার পরিচালক আহমদ আল-হারিরি জানান, ‘টেলিযোগাযোগ স্থাপনার ওপর একাধিক হামলার ফলে এই কেবল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যা সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের মূল কেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন করেছে’।
সংঘাতের ভবিষ্যৎ কী?
বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির অভ্যন্তরীণ বিভাজনের গভীরতা প্রকাশ করছে। বাশার আল-আসাদ অনুগতদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই আগামী দিনে আরও বড় সংঘর্ষের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এই সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ও আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান খোঁজার দাবি উঠেছে। তবে সিরিয়ার স্থিতিশীলতা এখন মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে। সূত্র: আল-জাজিরা