সাময়িক যুদ্ধবিরতি নয়, স্থায়ী সমাধান চাই— হামাসের স্পষ্ট বার্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ১০:০৯ এএম
-67cd1462680d8.jpg)
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস গাজায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো ধরনের বার্তা পাঠিয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাভি শনিবার (৯ মার্চ) সংগঠনের অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হামাস নিশ্চিত করতে চায়, সংগঠনটি সম্পূর্ণভাবে পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে নির্দিষ্ট শর্ত অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় যাওয়ার কথা রয়েছে। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে প্রচারিত খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বাস্তবতার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
এদিকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে সোমবার দোহায় প্রতিনিধিদল পাঠানাের ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল।
গাজায় স্থায়ী সমাধানের পক্ষে হামাস
হামাস বরাবরই বলে আসছে, তারা ইসরাইলের সঙ্গে কেবল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনায় বসতে চায় না। সংগঠনটি যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি, ইসরাইলি অবরোধ প্রত্যাহার, গাজায় পূর্ণ মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা এবং ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়।
হামাসের একাধিক কর্মকর্তাও এর আগে জানিয়েছেন, তারা এমন কোনো চুক্তি মেনে নেবে না, যেখানে ইসরাইল শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতির নামে সাময়িক বিরতি নেবে এবং পরে আবার আগ্রাসন শুরু করবে। তাদের মতে, ইসরাইল অতীতে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই নতুন শর্ত চাপিয়ে দিয়ে পুনরায় হামলা শুরু করেছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার দাবি
হামাসের দাবি, ইসরাইলের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তার স্পষ্ট কাঠামো রয়েছে এবং এতে তিনটি পর্যায়ের কথা উল্লেখ আছে। ত বে ইসরাইলের দিক থেকে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করা নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে। এই দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদি করার পাশাপাশি বন্দি বিনিময়, অবরোধ প্রত্যাহার এবং পুনর্গঠনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
মানবিক সংকট চরমে
অন্যদিকে, ইসরাইলের হামলা ও অবরোধের কারণে গাজার মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনে ৪৮,৪০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা ১,১১,৮০০ ছাড়িয়েছে।
এদিকে, ইসরাইল গত রোববার (৩ মার্চ) থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে আলোচনা শুরু করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়।
হামাসের দৃঢ় অবস্থান
হামাস বলছে, তারা যুদ্ধবিরতির নামে ইসরাইলকে সময় দেওয়ার বিপক্ষে। সংগঠনটি স্পষ্ট করেছে যে, সাময়িক সমঝোতা নয়, বরং স্থায়ী সমাধানের দিকেই এগিয়ে যেতে হবে। ইসরাইলকে অবশ্যই আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং অবরোধ প্রত্যাহার করে ফিলিস্তিনিদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ দিতে হবে।