
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১২ এএম
দ. কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের মুক্তি, তবে তদন্ত অব্যাহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

মুক্তির পর ইউন সুক ইওল। ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল শনিবার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আদালত প্রক্রিয়াগত কারণে তার গ্রেফতার আদেশ বাতিল করলেও, সামরিক আইন জারির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভোরবেলার অভিযানে তাকে আটক করা হয়। ইউনের বিরুদ্ধে ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করে বেসামরিক শাসন ব্যাহত করার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। তবে শুক্রবার আদালত প্রক্রিয়াগত ও আইনি কারণ দেখিয়ে তার গ্রেপ্তারাদেশ বাতিল করে, যা প্রসিকিউটররা অন্যায় সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।
কারামুক্তির পর সমর্থকদের শুভেচ্ছা
মুক্তির পর ইউন সুক ইওল হাসিমুখে ডিটেনশন সেন্টার থেকে বেরিয়ে আসেন এবং উল্লাসিত সমর্থকদের উদ্দেশে গভীর অভিবাদন জানান। পরে তিনি গাড়িবহর নিয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দিকে রওনা হন এবং সেখানে উপস্থিত শত শত সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ইউনের মুক্তির বিষয়ে প্রসিকিউশন দপ্তর আপিলের সুযোগ থাকলেও তারা তা করেনি। প্রসিকিউটররা বলেছেন, সাংবিধানিক আদালতের রায়ের দিকটি বিবেচনায় রেখে তারা আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং পরিবর্তে মূল বিচার প্রক্রিয়ায় নিজেদের যুক্তি উপস্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেবে।
অভিশংসন চূড়ান্ত হলে নতুন নির্বাচন
ইউন সুক ইওলের ভাগ্য এখন সাংবিধানিক আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে। যদি আদালত তার অভিশংসন বহাল রাখে, তবে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ থেকে অপসারণ করা হবে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
তবে প্রেসিডেন্টের পদ হারালেও তার বিরুদ্ধে চলমান অপরাধমূলক মামলাগুলো বহাল থাকবে।
‘শিগগিরই অপসারণ প্রয়োজন’: বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া
ইউনের আইনজীবীরা আদালতের রায়কে ‘আইনের শাসনের পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। তাদের মতে, গ্রেফতারের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার কারণে তার আটকাদেশ অবৈধ ছিল।
তবে বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির এক মুখপাত্র এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘ইউন এমনভাবে আচরণ করছেন যেন তিনি কোনো যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। এটি একজন অভিশংসিত রাষ্ট্রনেতার জন্য চরম লজ্জাজনক আচরণ’।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন একমাত্র পথ হলো তার দ্রুত অপসারণ।’
সামরিক আইন ঘোষণার জেরে অভিশংসন
পূর্বে প্রসিকিউটর থাকা ইউন সুক ইওল গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়াকে এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক সংকটে ঠেলে দেন, যখন তিনি হঠাৎ করে বেসামরিক শাসন স্থগিত করে সংসদে সেনা পাঠান।
তার সামরিক আইন জারির উদ্যোগ পার্লামেন্ট দ্রুত প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে অভিশংসিত করে। এরপর তিনি টানা দুই সপ্তাহ নিজ বাসভবনে নিজ নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন এবং ১৫ জানুয়ারি তাকে আটক করা হয়।