
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০০ এএম
এবার ‘ইঁদুরকাণ্ড’ নিয়ে ট্রাম্পের দাবি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ১০:১৫ পিএম

আরও পড়ুন
সম্প্রতি কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, বাইডেন প্রশাসন ‘ইঁদুরকে ট্রান্সজেন্ডার বানানোর জন্য’ ৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পটি আসলে ট্রান্সজেনিক ইঁদুরের ওপর গবেষণার জন্য অর্থায়ন করা হয়েছিল, যা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রক্রিয়া।
৯৯ মিনিটের ওই ভাষণে ট্রাম্প বলেন, বাইডেন প্রশাসনের ‘অপচয়মূলক খরচ’ শনাক্ত করতে ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি (DOGE)’ কাজ করছে এবং তারা খুঁজে বের করেছে যে, ‘ট্রান্সজেন্ডার ইঁদুর তৈরির জন্য’ ৮.২ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে।
তবে তার এই বক্তব্যে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।
বাস্তবে গবেষণার উদ্দেশ্য কী ছিল?
বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের এমন দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং বলেছেন, প্রকল্পটি ট্রান্সজেন্ডার নয় বরং ট্রান্সজেনিক ইঁদুরের ওপর গবেষণা নিয়ে ছিল। ট্রান্সজেনিক ইঁদুর হলো জেনেটিকালি পরিবর্তিত ইঁদুর, যেখানে বিদেশি ডিএনএ প্রবেশ করানো হয়। এ ধরনের ইঁদুর ব্যবহার করা হয় মানব জিনের কার্যকারিতা বোঝার জন্য, রোগের মডেল তৈরি করতে, ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল হরমোন থেরাপির স্বাস্থ্যগত প্রভাব বুঝতে পারা।
গবেষণাগুলোর জন্য কীভাবে ব্যয় করা হয়েছে?
হোয়াইট হাউসের দেওয়া তথ্যমতে, বাইডেন প্রশাসনের সময় নিম্নলিখিত গবেষণার জন্য ৮.২ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে—
৪.৫৫ লাখ ডলার – HIV ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নির্ণয়ে ক্রস-সেক্স হরমোন থেরাপি প্রাপ্ত ইঁদুরের ওপর গবেষণা।
২.৯৯ লাখ ডলার – টেস্টোস্টেরন থেরাপি গ্রহণকারী ইঁদুরের স্তন ক্যান্সারের হার তুলনা করা।
৩.১ মিলিয়ন ডলার – হরমোন কীভাবে অ্যাজমার ওপর প্রভাব ফেলে তা বিশ্লেষণ করা।
২.৫ মিলিয়ন ডলার – স্টেরয়েড হরমোন গ্রহণের ফলে প্রজনন স্বাস্থ্যের পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা।
১.২ মিলিয়ন ডলার – অ্যান্ড্রোজেন হরমোন কীভাবে প্রজনন নিউরোএন্ডোক্রাইন সিস্টেমকে প্রভাবিত করে তা পর্যবেক্ষণ।
৭.৩৫ লাখ ডলার – লিঙ্গ-নির্ধারিত হরমোন থেরাপির ফলে ইঁদুরের মাইক্রোবায়োম কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা বিশ্লেষণ।
ট্রাম্পের ভুল ব্যাখ্যা
গবেষণাগুলোতে ইঁদুরকে শারীরিকভাবে লিঙ্গ পরিবর্তন করানো হয়নি, বরং হরমোনের স্বাস্থ্যগত প্রভাব বিশ্লেষণের জন্য এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। তবে ট্রাম্প এটিকে ‘ট্রান্সজেন্ডার ইঁদুর বানানোর গবেষণা’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যা বাস্তব তথ্যের বিকৃত উপস্থাপন।
যা এখন রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যেখানে রিপাবলিকানরা এই গবেষণাকে ‘অপ্রয়োজনীয় ব্যয়’ হিসেবে দেখাচ্ছে, সেখানে ডেমোক্র্যাটরা বলছে- এটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা গবেষণা। সূত্র: এনডিটিভি