নাবলুসের মসজিদে মসজিদে হামলা-অগ্নিসংযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম

দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের বেশ কয়েকটি মসজিদে হামলা চালিয়েছে এবং ঐতিহাসিক আল-নাসর মসজিদে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার সকালে এসব হামলা চালানো হয় বলে জানায় তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে আনাদোলু জানিয়েছে, বর্বর ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর একটি বড় দল নাবলুসের একাধিক মসজিদে হামলা চালিয়ে সেগুলোর অভ্যন্তরীণ অংশ নষ্ট করেছে।
সংবাদ সংস্থাটি আরও জানায়, এ সময় ইসরাইলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঐতিহাসিক আল-নাসর মসজিদে অগ্নিসংযোগ করে। এমনকি দমকল বাহিনীর সদস্যদের আগুন নেভাতে বাধাও দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, আগুনে ইমামের কক্ষ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং মসজিদের দেয়াল ও কার্পেট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক আল-নাসর মসজিদ নাবলুসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য নিদর্শন। এটি মূলত রোমান যুগে একটি গির্জা ছিল। যেটি ১১৮৭ সালে মসজিদে রূপান্তরিত হয়।
ফিলিস্তিনের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইসরাইলি বাহিনীর এই হামলা এবং মসজিদে অগ্নিসংযোগের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি জানায়, ‘আজ ভোরে ইসরাইলি বাহিনী পুরোনো শহরের বাব আল-সাহা এলাকায় অবস্থিত আল-নাসর মসজিদে হামলা চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং নাবলুস পৌরসভার দমকল বাহিনীকে আগুন নেভাতে বাধা দেয়। ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে’।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইসরাইলি বাহিনী কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই পুরোনো শহরের একাধিক মসজিদে হামলা চালিয়ে সেগুলোর অভ্যন্তরে অপবিত্রতা সৃষ্টি করেছে।
নাবলুস এন্ডাওমেন্টস পরিচালক নাসের আল-সালমান এই হামলাকে ‘ইসরাইলের নির্মম আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সালের নাকবার (ফিলিস্তিনি গণচিন্তা) পর এমন ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি। ইসরাইল ধর্মীয়, নৈতিক এবং আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধানকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছে। যা কিনা উপাসনা ও পবিত্র স্থানে প্রবেশাধিকারের অধিকার নিশ্চিত করে’।
নাসের আল-সালমান এ সময় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও আইনি সংস্থাগুলোকে ইসরাইলের এই ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান ধ্বংসের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলের এহেন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে অধিকৃত পশ্চিম তীরজুড়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত ৯৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও প্রায় ৭,০০০ জন আহত হয়েছে।
এর আগে জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) ইসরাইলের দীর্ঘদিনের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সমস্ত বসতি সরানোর আহ্বান জানায়।