গাজা, লেবানন ও সিরিয়া থেকে বিপুল সম্পদ লুট করেছে ইসরাইলি সেনারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:২২ এএম

গাজা, লেবানন ও সিরিয়া থেকে ইসরাইলি সেনারা প্রায় ২৮ মিলিয়ন ডলারের নগদ অর্থ, স্বর্ণের বার, বিলাসবহুল গহনা এবং ১ লাখ ৮৩ হাজারের বেশি অস্ত্র লুট করেছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি গণমাধ্যম ইয়ানেট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লুটের পরিমাণ এত বেশি ছিল, সেনারা মজা করে বলেছে, ‘এই মালামাল বহন করতে গিয়ে আমাদের পিঠ ভেঙে গেছে।’
বিশেষ সামরিক ইউনিটগুলো এই লুটের বেশিরভাগ চালিয়েছে, যারা ‘শত্রু’ এলাকা থেকে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দায়িত্বে রয়েছে। তবে সাধারণ সেনারাও ব্যক্তিগতভাবে লুটপাট চালিয়েছে।
যুদ্ধ সরঞ্জামের বিশাল পরিমাণ লুট
ইসরাইলি সেনারা চলমান হামলা ও আগ্রাসনের অংশ হিসেবে সিরিয়া, লেবানন ও গাজা থেকে যে পরিমাণ অস্ত্র সংগ্রহ করেছে, তা দিয়ে একটি ছোট সেনাবাহিনী গঠন করা সম্ভব বলে জানিয়েছে ইয়ানেট।
লুট করা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে: বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, উন্নত অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র, হাজার হাজার বিস্ফোরক ডিভাইস, স্ট্যান্ডার্ড রাইফেল (নতুন, প্যাকেটবন্দি অবস্থায়), স্নাইপার রাইফেল, সামরিক যোগাযোগ ডিভাইস, কম্পাস, দূরবীন, নাইট ভিশন সরঞ্জাম, ইউনিফর্ম, বুট , ডজনেরও বেশি সামরিক যান, ১৯৩০ সালের ফরাসি রাইফেল ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান পিস্তল
দক্ষিণ লেবাননে লুটপাটে অংশ নেওয়া এক ইসরাইলি কর্মকর্তা জানান, কিছু গ্রামে গাড়ি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি, ফলে সেনারা লুট করা সামগ্রী কাঁধে বহন করেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা রাতের আঁধারে পিঠে করে ক্ষেপণাস্ত্র, অস্ত্র ও গোলাবারুদের বাক্স ইসরাইলে নিয়ে আসতাম। কিন্তু দ্রুতই বোঝা বেড়ে যায়। আমাদের পিঠ ভেঙে যাচ্ছিল, যদিও আমাদের সেনারা খুবই শক্তিশালী।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপুল পরিমাণ লুটের সামগ্রী এখন ইসরাইলের বিভিন্ন গোপন ভাণ্ডারে ও নিরাপদ বেইসমেন্টে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে ইসরাইল সরকার এই সম্পদ কী করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
কিছু রাজনৈতিক মহল এটি ইউক্রেনে পাঠানোর প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষা ও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে এই পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপকতা বিবেচনায় ইসরাইলের লুট করা সামগ্রী তুলনামূলকভাবে অপ্রতুল বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে।
ইসরাইলি বাহিনীর স্বীকারোক্তি
ইসরাইলি সেনাদের একটি বিশেষ ইউনিট এই লুট করা সামগ্রী পুনঃব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্যারন-ক্যাটজলার বলেন, ‘৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর আমরা তাদের ব্যবহৃত বিস্ফোরক পরীক্ষা করে আমাদের ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যানগুলো শক্তিশালী করেছি।’
ইসরাইলি সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি, তারা লুট করা বিস্ফোরক পুনর্ব্যবহার করছে কি না, তবে বিশাল চাহিদা মেটাতে এই পরিকল্পনা পরীক্ষাধীন রয়েছে।