ইসরাইলি ৪ জিম্মির বিনিময়ে মুক্তি পাওয়া কারা সেই ফিলিস্তিনি বন্দি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
-67c1d143dfd45.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের শেষ ধাপে ৪ জিম্মির মৃতদেহের বিনিময়ে ৬০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বন্দি থাকা একজন ও আমেরিকান শান্তি রক্ষা কর্মীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া একজন ব্যক্তিও রয়েছেন।
গত সপ্তাহে হামাস ছয় জীবিত জিম্মিকে মুক্ত করার পর এসব বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কারা সেই বন্দি যাদের মুক্তি দিচ্ছে ইসরাইল।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের ক্লাব, নতুন এবং পুরোনো বন্দিদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল বলেছে, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের হামলার পর গাজায় আটক ২৪ ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল, যারা কিনা এ যুদ্ধের সূত্রপাত করেছিল। এদের মধ্যে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সি ২৩ জন কিশোর এবং ৩৫ বছর বয়সি একজন নারীও রয়েছেন।
ইসরাইল এসব বন্দিদের সন্ত্রাসী হিসেবে দেখলেও ফিলিস্তিনিদের চোখে এসব বন্দিরা মুক্তিযোদ্ধা। কেননা, তারা দীর্ঘ এক দশকব্যাপী ইসরাইলি সামরিক দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ-সংগ্রাম করছে। আর মুক্তি পাওয়া প্রায় প্রতিটি ফিলিস্তিনির অন্তত একজন বন্ধু বা পরিবারের সদস্য রয়েছেন, যারা কিনা পাথর নিক্ষেপের মতো ছোট অপরাধে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি হয়েছিলেন। আর এসব বন্দিরা কোনো বিচার ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে কারাভোগ করছেন।
বৃহস্পতিবার মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলায় জড়িত থাকার দায়ে যাবজ্জীবন বা দীর্ঘ কারাদণ্ড দেওয়া ১৫১ বন্দি। যার মধ্যে ৪৩ জনকে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে ফেরত পাঠানো হবে এবং ৯৭ জনকে নির্বাসনে পাঠানো হবে। এর বাইরেও ইসরাইল ১ হাজারেরও বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যারা কিনা ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িত নয়।
এবার দেখে নেওয়া যাক, মুক্তি পাওয়া সেই ফিলিস্তিনি বন্দিদের-
নেইল বারঘৌতি
কোবার পশ্চিম তীরের গ্রামের ৬৮ বছর বয়সি বারঘৌতি গত ৪৫ বছরেরও বেশি সময় পর ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। মুক্তি পাওয়ার আগে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাকে বিশ্বের দীর্ঘতম রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে অভিহিত করেছে। ইসরাইলের দাবি, তিনি হামাসের সঙ্গে যুক্ত।
১৯৭৮ সালে একজন ইসরাইলি বাস চালকের হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে ২০১১ সালে একজন ইসরাইলি সৈন্যের বিনিময়ে মুক্তি পাওয়া ১ হাজার জনের মধ্যে ছিলেন তিনি। তবে পরবর্তীতে ২০১৪ সালে পুনরায় গ্রেফতার করা হয় বারঘৌতিকে। তার বিরুদ্ধে এ সময় অভিযোগ করা হয়, তিনি ইচ্ছাকৃত হত্যা, অবৈধ সংগঠনের সদস্যপদ, বোমা তৈরি করা, বিস্ফোরক রাখা এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন।
বিলাল আবু ঘানেম
পূর্ব জেরুজালেমের ৩১ বছর বয়সি বিলাল আবু ঘানেম ২০১৫ সালে বাস হামলায় তিন ইসরাইলি নিহতের দায়ে যাবজ্জীবন এবং ৬০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। নিহতদের মধ্যে একজন হলেন রিচার্ড লাকিন। যিনি একজন আমেরিকান শান্তিরক্ষা কর্মী।
আম্মার আল-জিবেন
আল-জিবেন পশ্চিম তীরের নাবলুসের বাসিন্দা। ১৯৯৭ সালে জেরুজালেমের একটি বাজারে বোমা হামলার পরিকল্পনা করার জন্য তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি একজন মার্কিন নাগরিকসহ ১৬ জন নিহতের জন্য দায়ী।
আহমেদ বারঘৌতি
আহমেদ বারঘৌতি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মারওয়ান বারঘৌতির ঘনিষ্ঠ সহযোগী, যিনি এখনো কারাবন্দি। ২০০০ সালের শুরুর দিকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা ফিলিস্তিনি বিদ্রোহের সময় ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকারী হামলা চালানোর জন্য তাকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়।