সেই ভারতীয় শিক্ষার্থীর বিষয়ে অবশেষে সদয় হলো ট্রাম্প প্রশাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১১ পিএম

ভারত সরকারের অনুরোধের পর অবশেষে সদয় হলো ট্রাম্প প্রশাসন। নীলম শিন্ডে নামের আলোচিত সেই ভারতীয় শিক্ষার্থীর বাবার জন্য জরুরি ভিসা সাক্ষাৎকারের অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র।
৩৫ বছর বয়সি নীলম ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তিনি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে কোমায় রয়েছেন। খবর এনডিটিভির।
নীলম শিন্ডের বাবা নিশ্চিত করেছেন, তিনি মুম্বাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেটে শুক্রবার সকাল ৯টায় সাক্ষাৎকার দেবেন। তিনি এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমরা কনস্যুলেট থেকে সাক্ষাৎকারের জন্য ফোন পেয়েছি... সবার সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞ। আশা করি আমরা ভিসা পাবো’।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তরাষ্ট্র বিভাগের পক্ষ থেকে মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সাধারণত চিকিৎসার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে ভ্রমণের অনুমতি দ্রুত দেওয়া হয়, তবে এই ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণ তাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
জানা গেছে, নীলম শিন্ডে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি চার চাকার গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে তার পরিবার দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভিসার জন্য আবেদন করেছিল। তবে তাদের সেই আবেদন দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে ছিল।
নীলমের চাচা কদম শিন্ডে জানিয়েছেন, আগে তাদেরকে জানানো হয়েছিল যে প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে কাছের তারিখ আগামী বছর পাওয়া যাবে।
দুর্ঘটনায় নীলমের দুই হাত ও দুই পা ভেঙে গেছে এবং জরুরি ব্রেন সার্জারি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার চিকিৎসার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তবে সার্জারির পর থেকে তিনি কোমায় রয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে জানায়, নীলম শিন্ডে সংকটাপন্ন অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছেন এবং তার সুস্থতার সম্ভাবনা অনিশ্চিত।
এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার পরিবারের সদস্যদের ভিসার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল। কারণ নীলমের চিকিৎসার জন্য অন্ততপক্ষে তার বাবাকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। তিনি গুরুতর অবস্থায় থাকায় নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না এবং লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত চিকিৎসাজনিত জরুরি পরিস্থিতিতে ‘অগ্রাধিকারমূলক’ ভিসা দেয়। তবে এতে একজন চিকিৎসকের লিখিত সুপারিশ প্রয়োজন হয়। যা দ্রুত অনুমোদনের জন্য মার্কিন সরকারকে অনুরোধ করতে পারে। তবে এ ধরনের জরুরি ভিসার জন্য নির্দিষ্ট সীমিত সংখ্যক স্লট বরাদ্দ থাকে।
ঘটনাটি আলোচনায় আসে যখন ভারতের এনসিপি দলীয় এমপি সুপ্রিয়া সুলে বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি গুরুতর সমস্যা। আমাদের একসঙ্গে এর সমাধান করতে হবে’। একই সঙ্গে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
এর পরই নড়েচড়ে বসে মহারাষ্ট্র সরকার। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের দপ্তর নীলমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এদিকে স্থানীয় পুলিশ ওই দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এবং দোষী চালককে হেফাজতে নিয়েছে। তবে নীলমের পরিবারের একজন রক্তসম্পর্কীয় সদস্য উপস্থিত না থাকায় আইনি কার্যক্রম পরিচালনায় জটিলতা দেখা দিয়েছে।
এই ঘটনা ভারতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি অনেকেই মার্কিন ভিসা ব্যবস্থার জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।