ভারতের মধ্যে ইউজিসি-নেট পরীক্ষায় প্রথম হলেন আনাম জাফর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৫ পিএম

মাওলানা আজাদ জাতীয় উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (এমএএনইউইউ) ২০২৪ সালের ইউজিসি-নেট জেআরএফ ডিসেম্বরের পরীক্ষায় ভারতের মধ্যে র্যাংকিংয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আনাম জাফর।
আনাম জাফরের বয়স ২৫ বছর। পরীক্ষায় ১০০ পারসেন্ট নম্বর পেয়েছে তিনি। তার মা রেহানা খাতুন বিহারের ধরবঙ্গ জেলার চান্দনপট্টি গ্রামের বাসিন্দা। যখন রেহানা খাতুন তার কন্যার এই অবিস্মরণীয় কীর্তির খবর শুনলেন, তখন তিনি কাঁদতে না পেরে নিজের চোখের অশ্রু মুছতে পারলেন না।
আনাম জাফর বর্তমানে মাওলানা আজাদ ন্যাশনাল উর্দু ইউনিভার্সিটির এমএড চতুর্থ সেমিস্টারের শেষ পর্যায়ে আছেন।
বুধবার এই সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়ার দুই দিন পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিভাগ আনাম জাফরকে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা প্রদান করে। ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা তার অসাধারণ অর্জন উদযাপন করেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষকরা আনাম জাফরের নিষ্ঠা, অধ্যবসায় এবং উৎকৃষ্টতার প্রশংসা করেন। তার অর্জনকে ভবিষ্যতের গবেষকদের জন্য একটি আদর্শ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
বিভাগের প্রধান প্রফেসর শাহীন বলেন, আনাম জাফরের সাফল্য এমএএনইউইউতে উচ্চ একাডেমিক মান এবং গবেষণা সংস্কৃতির প্রমাণ। তার এই সাফল্য অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে উৎকর্ষতার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে।
আনামের সঙ্গে বিভাগের পক্ষ থেকে অন্যান্য ইউজিসি-নেট এবং জেআরএফ পরীক্ষায় সফল শিক্ষার্থীদেরও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তাদের সাফল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ এবং শিক্ষকগণের নিবেদিত মেন্টরশিপের সফল ফলস্বরূপ হিসেবে উদযাপন করা হয়।
আনামের মা রেহানা খাতুনের সংসার ছিল কঠিন। যখন আনাম আট বছর বয়স ছিল, তার স্বামী তাকে ডিভোর্স দেন। প্রাইভেট স্কুলে ৮০০ টাকা মাসিক বেতনে শিক্ষকতা করা রেহানা খাতুন তার সন্তানকে সেন্ট্রাল বোর্ডের অধীনে পড়াশোনা করানোর ব্যবস্থা করেন।
এমএএনইউইউ সূত্রে জানা গেছে, আনামের চাচা (তার বাবার ভাই) ছাড়া অন্য কেউ তার কঠিন সময়ে তাকে সাহায্য করেনি। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে কঠিন পথ পাড়ি দিতে গিয়ে রেহানা খাতুন তার মেয়েকে এমএএনইউইউ-এর শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিএড-এ ভর্তি করান। এরপর আনামের পরবর্তী পদক্ষেপ ছিল হায়দরাবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএড-এ ভর্তি হওয়া।