কেন ইউরোপ যেতে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন পাকিস্তানিরা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৭ পিএম
-67c0036b61a38.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
ইউরোপ; এক উন্নত জীবনের হাতছানি। যে স্বপ্নে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে পারি জমাচ্ছেন পাকিস্তানের হাজারো তরুণ। কেন হঠাৎ নিজ দেশ ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপের দিকে ঝুঁকছে দেশটির তরুণরা? কেন অবৈধভাবে সাগরপথে ইউরোপে গিয়ে মৃত্যুকে বরণ করে নিচ্ছেন তারা? সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে ভয়েস অব আমেরিকা।
আমির আলী যখন গত গ্রীষ্মে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে তার গ্রামের সরু গলিগুলো ছেড়ে স্পেনের বিশাল চত্বরগুলোর উদ্দেশে রওনা হন, তিনি ভেবেছিলেন উন্নত এক জীবনের জন্য তার স্বপ্ন অবশেষে সত্য হতে চলেছে। এই ২১ বছর বয়সি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশে ভিসা পেতে সাতবার ব্যর্থ হয়েছেন।
ছয় মাস পর, আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম আফ্রিকা উপকূল থেকে মরক্কোর কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের একটি আটকে পড়া নৌকা থেকে যে ২২জন পাকিস্তানিকে উদ্ধার করে, আলী ছিলেন তাদের একজন।
ক্ষুধা, পানিশূন্যতা এবং মানবপাচারকারীদের হাতে নির্যাতনের ফলে যে ৫০জন পুরুষ মারা যায়, তাদের মধ্যে অন্তত ৪৩জন ছিলেন পাকিস্তানি।
পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা জেলায় তার গ্রামে আঘাত পাওয়া পা নিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে আলী বলেন, তিনি বেঁচে যাওয়ায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন।
‘এটা এমন না যে, আমরা কিছু খাবার বা পানি পাওয়ার কারণে বেঁচে গেছি। একদম না। আল্লাহ আমাদের বাঁচাতে চেয়েছেন, শুধুমাত্র সেকারণেই আমরা বেঁচে গেছি।’
গত বছর ডিসেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউরোপ যাওয়ার পথে নৌকা দুর্ঘটনায় কয়েক ডজন পাকিস্তানি মারা গেছেন।
ইউরোপে বেআইনিভাবে প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসীরা যেসব দেশ থেকে আসেন, তাদের তালিকার প্রথম ১০টিতে পাকিস্তান নেই। কিন্তু তারপরও, পাকিস্তানের হাজার হাজার নাগরিক প্রতি বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
কর্মকর্তারা বলেন, মানবপাচারকারীরাও চালাক হয়ে যাচ্ছে। তাদের নেতারা আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বিদেশে চলে গেছে, এবং তাদের অপরাধকর্ম থেকে আয় করার অর্থ সরানোর জন্য ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করছে।
আলীর যাত্রা
আলীর যাত্রা শুরু হয় গুজরানওয়ালা থেকে ১,২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে করাচীতে, যেখানে তিনি সেনেগালের উদ্দেশে বিমান যোগে রওনা দেন। মানবপাচারকারীরা তার ভিসার আয়োজন করে দেয়।
‘সেই নামে কোন দেশের অস্তিত্ব আছে, তাই আমি জানতাম না।’ আলী ভিওএ’কে বলেন।
সেনেগাল থেকে তিনি মরিতানিয়ার জন্য ভিসা সংগ্রহ করেন। সেখানে তিনি অন্যান্য কয়েক ডজন অভিবাসন-প্রত্যাশীর সাথে একটি নিরাপদ বাসায় প্রায় পাঁচ মাস থাকেন।
স্বপ্নের যাত্রা দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছিল জানিয়ে আলী বলেন, ‘এক ঘরে এত লোক ছিল যে সেখানে বসার জায়গা ছিল না। মানসিকভাবে সেটা খুবই কঠিন ছিল।’
জানুয়ারির ২ তারিখের ভোরে তাকে আরও ৮০ জনেরও বেশি মানুষের সাথে একটি নৌকায় ঠাসা হয়। নৌকাটি মরিতানিয়ার নুয়াকশোত থেকে স্পেনের ক্যানারি আইল্যান্ডস-এর উদ্দেশে রওনা হয়।
একদিন যাত্রার পর নৌকার জ্বালানী শেষ হয়ে যায়। নৌকার ওজন কমানোর জন্য, আলী বলেন, মানবপাচারকারীরা যাত্রীদের মালপত্র সমুদ্রে ফেলে দেয় এবং তাদের খাবারের রেশন কেড়ে নেয়।
‘নৌকায় চতুর্থ দিনে, একজন ক্ষুধার জ্বালায় পাগল হয়ে যায়। তিনি সমুদ্রে লাফ দেন। এর পরে কী হতে পারে তা ভেবে আমরা সবাই খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’
কেউ প্রতিবাদ করলে বা আদেশ না মানলে মানবপাচারকারীরা তাদের মারধর করে বলেও জানান তিনি।
‘চোরাচালানকারীরা আমাদের মৃতদেহগুলো পানিতে ফেলে দিতে বলে, আলী বলেন। ‘আমরা আমাদের ভাইকে কীভাবে পানিতে ফেলে দিব, এই ভেবে যখন তা করতে অস্বীকার করি, তারা আমাদের প্রচণ্ড মারধর করে।’
এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শেষ হয় দু’সপ্তাহ পর, যখন জেলেদের এক ট্রলার থেকে তাদের দেখতে পায়, এবং মরক্কোর কর্তৃপক্ষ বেঁচে থাকা অভিবাসীদের উদ্ধার করে।
আলীর পরিবার তাকে স্পেনে পৌঁছানোর জন্য তাদের গবাদিপশু এবং আবাদি জমি বিক্রি করে এবং আরও টাকা ধার করে প্রয়োজনীয় ১০,০০০ ডলার সংগ্রহ করে। আলীর মা ঋণ নিয়ে চিন্তিত কিন্তু ছেলে জীবিত থাকায় আনন্দিত।
প্রায় দু’ঘণ্টা দূরে পাঞ্জাবের গুজরাট জেলায় হাজি শওকত আলী শোকে বিহ্বল। তার ছেলে চৌধুরী আতিফ গোরসি এবং ভাতিজা চৌধুরী সুফিয়ান গোরসি বাঁচতে পারেনি।
তাদের গ্রামের দিকে যাওয়া রাস্তার পাশে একটি সাইনবোর্ড তাদেরকে শহীদ হিসেবে স্মরণ করছে।
‘আমাদের দুর্বলতার কারণে তাদেরকে পাঠিয়েছিলাম।’ বলছেন আলী, যিনি শোকার্ত লোকজনের মাঝে বসে ছিলেন, যাদের কয়েকজন ইউরোপ থেকে এসেছে। ‘দুর্বলতাটা হচ্ছে টাকা।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গবেষণাকারী সংস্থা গলআপ এবং পাকিস্তান ইন্সটিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকনমিক্স বা পাইড-এর গবেষণা কর্মসংস্থানের অভাবকে দেশ থেকে চলে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কোন মতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মেলাতে পাড়ছে।
পাকিস্তানের ব্যুরো অফ এমিগ্রেশন অ্যান্ড ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসেই ৬৫,০০০ মানুষ আইনসম্মত পথে কাজ করতে বিদেশ গিয়েছেন।
তার আগে, ২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর আট লক্ষ লোক কাজ নিয়ে বিদেশ গিয়েছেন। বেশির ভাগ মধ্যপ্রাচ্যে গেছেন কিন্তু কিছু সংখ্যক গেছেন ইউরোপে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সীমান্ত ও উপকুল রক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্স-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানিরা ২০২৪ সালে প্রায় ৫,০০০ বার বেআইনিভাবে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে।
কাশিফ আলী ইতালিতে নৌকা তৈরিতে কাজ করেন। তিনি শত শত ডলার খরচ করে ইউরোপে গেছেন প্রায় এক দশক আগে।
অভিবাসনের দিক থেকে আমির আলীর নিজস্ব জেলা গুজরানওয়ালা এবং গোরসি ভাতিজাদের গুজরাট-এর সাথে নিকটবর্তী শিয়ালকোট, মান্দি বাহাউদ্দিন এবং ফয়সালাবাদ এগিয়ে আছে, যদিও তারা কৃষি এবং শিল্প কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র।
‘তারা একেবারে হতদরিদ্র না।’ বলছেন জনতত্ত্ববীদ দূরে নায়াব। তিনি বিশেষ করে এই অঞ্চলের অভিবাসী প্রত্যাশীদের তাদের যাত্রার খরচ মেটনোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করার ক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করেন।
‘তবে এটা শুধু আর্থিক ব্যাপার না,’ নায়াব, যিনি পাইড গবেষণায় যুক্ত ছিলেন, ভিওএ’কে বলেন। ‘অন্য যে দুই বিষয় বেরিয়ে আসে তা হলো, লাইফস্টাইল, এবং কোন না কোন ভাবে, তারা মনে করে যে দেশের বাইরে তারা বেশি সম্মান পাবে।’
নায়াব ব্যাখ্যা করেন যে, অনেক পাকিস্তানি মনে করেন যে, দেশের ধনী লোকজনের তুলনায় তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়।
‘এই পার্থক্যর কারণে পুরো সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে তাদের অনেকের মোহভঙ্গ হয়েছে,’ তিনি বলেন।
পাইড -এর গবেষণায় দেখা গেছে সুযোগ পেলে পাকিস্তানের ৩৭ শতাংশ মানুষ দেশ ছেড়ে চলে যাবে।
ভাগ্যের পরিবর্তন
কাশিফ আলী, মৃত গোরসিদের একজন ভাগ্নে, এক দশক আগে ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য একজন স্পন্সর পেতে কয়েক’শ ডলার খরচ করে।
‘পাকিস্তানে একজন শ্রমিক দিনে ৩ ডলার মত আয় করে। একই কাজের জন্য, বিদেশে তারা ২০ থেকে ২৫ ডলার আয় করে,’ বলছেন আলী, যিনি নৌকা তৈরির কাজে যুক্ত।
পাকিস্তানে তার পরিবারের এখন একটি নতুন বাসা এবং গাড়ি আছে।
ভাগ্যের এধরনের পরিবর্তন মধ্য পাঞ্জাবের ছোট শহর এবং গ্রামে সর্বত্র দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এর ফলে অন্যান্যরা অনুপ্রাণিত হয়ে ইউরোপ যাওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নেন।
এধরনের সাফল্যের আরেকটি কাহিনী ইশরাক নাজিরকে মান্দি বাহাউদ্দিন থেকে গ্রিস যেতে প্রেরণা দেয়। তিনি ২০০৯ সালে তুরস্কে কিছুদিন পর্যটক হিসেবে থাকার পর এই ইউরোপিয়ান দেশে প্রবেশ করেন।
তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর নাজিরকে গ্রিক রেসিডেন্স পারমিট পেতে দশ বছর লেগেছিল।
অনেক বছর ধরে তিনি খরচ মেটানোর জন্য গরু চরানো থেকে গাছে রং লাগানোর কাজ করেছেন। এখন তিনি একটি প্যাকেজিং কারখানায় কাজ করে দিনে প্রায় ৬০ ডলার আয় করছেন।
‘আমাকে অনেক সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছিল। কিন্তু আমি যদি পাকিস্তানে রয়ে যেতাম, আমি কোন কিছুই পেতাম না,’ নাজির প্যাকিং-এর কাজ করার মাঝে ভিওএ’কে টেলিফোনে বলেন। ‘আমার বন্ধুরা যেখানে শুরু করেছিল এখনো সেখানেই আছে।’
অক্টোবরে শিয়ালকোট জেলার উমার শাইদ লিবিয়া থেকে বেআইনিভাবে নৌকা করে গ্রিসে আসেন।
‘আমার কষ্ট হচ্ছে। কাজ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। এখানে খুব কম সুযোগ আছে। আমার কোন বন্ধু বা আত্মীয় নেই যাদের কাছে সাহায্য চাইতে পারি,’ শাইদ টেলিফোনে বলেন।
শাইদ বলেন তিনি মানবপাচারকারীদের পাওনা এবং দৈনন্দিন খরচ মেটাতে ১৫ হাজার ডলারের মত খরচ করেছেন।
‘সত্যি কথা বলতে, আমি লোকজনের গল্প বিশ্বাস করি এবং বোকার মত এই সিদ্ধান্ত নেই,’ শাইদ বলেন। তারপরও, তিনি বলেন তিনি পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না।
এই মাসে, মানবপাচার-বিরোধী আইন আরও কঠোর করতে পাকিস্তানের সেনেট তিনটি বিল পাস করেছে।
পাকিস্তানে পাচার-বিরোধী অভিযান
গ্রিসের পাইলোস উপকূলে ২০২৩ সালে অভিবাসীদের নিয়ে সবচেয়ে ভয়ানক নৌকা দুর্ঘটনার একটিতে তাদের কয়েক’শ নাগরিক মারা যাওয়ার পর পাকিস্তান মানব পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস-এর এক রিপোর্টে বলা হয়, পাইলোস বিপর্যয়ের পর কর্তৃপক্ষ ৮৫৪ জন সন্দেহভাজন মানব পাচারকারী গ্রেফতার করেছে।
সাম্প্রতিক ঘটনায় হতাশ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মানবপাচার মোকাবেলা করতে জানুয়ারি মাসে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেন। তিনি নিজেই এই টাস্ক ফোর্সের প্রধান।
কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি বা এফআইএ তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়ে কয়েক ডজন সন্দেহভাজন মানবপাচারকারী গ্রেফতার করেছে এবং অন্যান্যদের লুকানো অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করতে তাদের সম্পত্তি জব্দ করেছে।
‘প্রথমবারের মত আমরা দেখলাম তারা (পাচারকারী) বিট কয়েন এবং ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করছে। তারা অর্থ পাচারের প্রথাগত পথ থেকে সরে গেছে,’ বিলাল তানভীর, এফআইএ’র গুজরাট অঞ্চলের উপ-পরিচালক ভিওএ’কে বলেন।
তবে তিনি বলেন, অর্থায়নের অভাব এবং অভিযুক্ত অপরাধীদের দোষী সাব্যস্ত করার ব্যর্থতা এই অপরাধ দমনে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
এফআইএ নিজেরাও ক্রমশ তদন্তের মুখে পড়ছে। শরিফ সরকার গত মাসের শেষে এজেন্সির প্রধানকে অপসারণ করে। মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে বা মানবপাচারের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য ১০০’রও বেশি কর্মকর্তাকে হয় বরখাস্ত, নয় সাসপেন্ড না হয় কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
মরক্কোর উপকূলে বেঁচে যাওয়া আলী ভিওএ’কে বলেন, করাচী বিমানবন্দরে তার গ্রুপের সদস্যদের সেনেগালগামী বিমানে উঠতে কোন সমস্যা হয়নি।
‘এজেন্টদের সাথে সম্পৃক্ত একজন এসে আমাদেরকে বলে তার সাথে আসার জন্য। আমার যেখানে গেছি, তার পেছনে পেছনে গেছি,” আলী বলেন। “কেউ আমাদের থামায় নাই।’
তানভীর তার এজেন্সির পক্ষে কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা দেশে ঢুকছে তাদের উপর অফিসারদের নজর বেশি থাকে, যারা বাইরে যাচ্ছে তাদের উপর নয়।
বন্ধু এবং প্রতিবেশী পরিবেষ্টিত অবস্থায় আলীকে হতাশ দেখালো। তিনি ভিওএ’কে বলেন যে, তিনি নৌকা করে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা সমর্থন করবেন না। ঘরে অন্যান্যদের ভিন্নমত ছিল।
‘আমি কেন মিথ্যা কথা বলবো?’ বলছেন তারিক বাজওয়া, যিনি তাঁর ছেলের আর কয়েক বছর পর বেআইনিভাবে ইউরোপ যাওয়ার পরিকল্পনা সমর্থন করেন। ঘরে উপস্থিত কয়েকজন তরুণ তাঁর সাথে একমত।
কেন ইউরোপ? ‘এমনিই,’ বলছেন কৃষকের ছেলে হামজা কাইউম। ‘ইউরোপে কৃষিকাজ হয়। আমি সেটা এখানে করতে চাই না,’ এই ২০-বছর বয়স্ক ক্লাস সিক্স পাস তরুণ বলেন।
যখন জিজ্ঞেস করা হয় তারা কি সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন কি না, মুহাম্মাদ জোহাইব, যার ভাইয়েরা মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছে, বলেন ‘কেন না?’
‘প্লেনও তো ক্র্যাশ করে, তাহলে নৌকা ডুবি নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন?’ কাইউম বলেন। ‘একজন তাদের বারির সামনেও দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারে।’