গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৬ এএম

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে সহায়তা, মদদদান এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অবদান রাখার জন্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তার সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি)-কে এমনটাই আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন নাগরিক সমাজ সংস্থা ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ (ডন)।
সংস্থাটি গত ১৯ জানুয়ারি আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খানের কাছে ১৭২ পৃষ্ঠার একটি চিঠি জমা দিয়েছে। আইসিসি-নিবন্ধিত আইনজীবী এবং অন্যান্য যুদ্ধাপরাধ বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় প্রস্তুত করা এই চিঠিতে গাজায় ইসরাইলি অপরাধকে সহজতর করার জন্য সামরিক, রাজনৈতিক এবং জনসাধারণের সমর্থন প্রদানের জন্য এই কর্মকর্তাদের ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যমূলক সিদ্ধান্তের একটি নমুনা বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র স্থানান্তর, গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি, লক্ষ্যবস্তু সহায়তা, কূটনৈতিক সুরক্ষা এবং ইসরাইলের অপরাধের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ডনের বোর্ড সদস্য এবং প্রবীণ যুদ্ধাপরাধ আইনজীবী রিড ব্রডি বলেছেন, ইসরাইলি অপরাধে জড়িত থাকার জন্য জো বাইডেন, অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন এবং লয়েড অস্টিনের বিরুদ্ধে তদন্তের জোরালো ভিত্তি রয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি হাসপাতাল, স্কুল এবং ঘরবাড়িতে মার্কিন বোমা নিক্ষেপ, হত্যা এবং নিপীড়নের অভিযান আমেরিকান সহায়তায় পরিচালিত হয়েছে। ইসরাইল ঠিক কী করছে তা সম্পর্কে মার্কিন কর্মকর্তারা অবগত ছিলেন, তবুও তাদের সমর্থন কখনও থামেনি। ’
ডনের চিঠিতে রোম সংবিধির অনুচ্ছেদ ২৫(৩)(সি) এবং (ডি) লঙ্ঘনের জন্য বাইডেন, ব্লিঙ্কেন এবং অস্টিনের বিরুদ্ধে তদন্তের আইনি এবং বাস্তব ভিত্তি তুলে ধরা হয়েছে। এতে গাজায় ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সংঘটিত অপরাধে সহায়তা, সহায়তা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার চিহ্নিত অপরাধ, যার মধ্যে রয়েছে অনাহারের যুদ্ধাপরাধ এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করা এবং রোম সংবিধির অধীনে হত্যা, অমানবিক কাজ এবং নিপীড়নসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ। এর মধ্যে রয়েছে ধারা ৮(২)(খ)(২) এর অধীনে বেসামরিক বস্তুর উপর ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ পরিচালনার যুদ্ধাপরাধ এবং ধারা ৬ এর অধীনে গণহত্যার অপরাধে তাদের ভূমিকা।
ডনের নির্বাহী পরিচালক সারাহ লিয়া হুইটসন বলেন, ‘বাইডেনে, ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন কেবল ইসরাইলের জঘন্য ও ইচ্ছাকৃত অপরাধের অপ্রতিরোধ্য প্রমাণ উপেক্ষা এবং ন্যায্যতা প্রদান করেননি, ইসরাইলে অস্ত্র স্থানান্তর বন্ধ করার জন্য তাদের নিজস্ব কর্মীদের সুপারিশকে অগ্রাহ্য করেছেন। তারা ইসরাইলকে নিঃশর্ত সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান করে দ্বিগুণ করেছেন যাতে এটি তার নৃশংসতা চালাতে পারে। ’
হুইটসন বলেন, ‘ইসরাইল যাতে গাজায় হামলা চালিয়ে যেতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একাধিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ভেটো দিয়ে তারা তেল আবিবকে কেবল প্রয়োজনীয় সামরিক সহায়তাই নয়, সমানভাবে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সমর্থনও প্রদান করেছিলেন। ’
তথ্যসূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর