Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

জার্মানিতে কট্টর ডানপন্থিদের উত্থানে শঙ্কা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম

জার্মানিতে কট্টর ডানপন্থিদের উত্থানে শঙ্কা

জোট সরকারের পতনের সাড়ে তিন মাস পর নতুন করে নির্বাচন হতে যাচ্ছে জার্মানিতে। দেশটির পার্লামেন্টের ২১তম নির্বাচন আজ। জার্মানির নির্বাচন নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে দেখা না গেলেও এবারের জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। বিশেষ করে গোটা ইউরোপের নজর এখন ভোটের ফলের দিকে। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটের পর এ নির্বাচন দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এবার কট্টর ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) উত্থান নিয়েও বাড়ছে শঙ্কা। বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, আনাদোলু।

দেশটিতে জোট সরকারের পতন হয় সাড়ে তিন মাস আগে। যখন বাজেট নীতি ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে দেশটির অর্থমন্ত্রীকে পদচ্যুত করা হয়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে নতুন সরকার গঠিত হবে, যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে। তবে এ নির্বাচনে এএফডির জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশের এবারের নির্বাচনে অভিবাসনবিরোধী কট্টর জাতীয়তাবাদী দল এএফডির ভোট ও আসন বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিরোধীরা। দলটি এবার ২০ শতাংশের বেশি ভোট পেলে পার্লামেন্টে তাদের আসন দেড়শতে পৌঁছাতে পারে। জার্মানির পার্লামেন্টে মোট আসন সংখ্যা ৬৩০। এমনটা হলে এএফডি সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে জার্মানির নানা নীতিতে তাদের প্রাধান্য দেখা যেতে পারে। ইলন মাস্ক ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও ওয়েইডেলকে সমর্থন করছেন। কট্টর ডানপন্থি এ দল জার্মানির সীমান্ত সুরক্ষিত করা এবং অবৈধ অভিবাসী ও অপরাধীদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এদিকে মূলধারার প্রায় সব দলই এএফডির সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেও রোববারের ভোটে কোনো একক দলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যে কারণে নতুন সরকার গঠনে খানিকটা সময় যেমন লাগতে পারে, তেমনি এএফডির গুরুত্বও বেড়ে যেতে পারে। 

বিভিন্ন জনমত জরিপে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট পার্টির (সিডিইউ) সম্ভাবনাকে এগিয়ে রাখছে। দলটির প্রার্থী ফ্রেডরিখ মার্জ বলেছেন, তারা ক্ষমতায় গেলে জার্মানি ইউরোপের দায়িত্ব নেবে। বিদায়ি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের দল মধ্য বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি) ভোটে দ্বিতীয় হতে পারে। তেমনটা হলে সিডিইউ ও এসপিডি-ই জোট গঠন করতে পারে। তবে শলৎজ আর চ্যান্সেলর পদে ফিরতে পারবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। শলৎজের পুনরায় চ্যান্সেলর হওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত। এবারের নির্বাচনে কট্টর বামপন্থিদের ভোটও বাড়বে বলে অনেকে ধারণা করছেন।

জার্মানির এই নির্বাচন শুধু দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনীতি নয়, সমগ্র ইউরোপের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অভিবাসন, অর্থনীতি ও নিরাপত্তা নিয়ে যে নতুন নীতিগুলো গৃহীত হবে তা শুধু জার্মানিতেই নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ভবিষ্যতও জড়িয়ে আছে এই নির্বাচনের সঙ্গে। আসন্ন নির্বাচনের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সরাসরি নির্ভর করছে। চলমান যুদ্ধ নিরসনে ইউরোপীয় ইউনীয়নের (ইইউ) অবস্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে জার্মানির বয়ান অত্যন্ত গুরুত্ববহ। এদিকে এএফডির ইউক্রেনবিরোধী অবস্থান ইইউর অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইউক্রেনে জার্মানির দেওয়া সামরিক সহায়তা পাঠানোর বিপক্ষে এই দল। এ পরিস্থিতিতে জার্মানির নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে কিয়েভসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের প্রশাসন। 

বিবিসি জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় স্থবির হয়ে আছে জার্মানি। আগের সরকারের পতনের পর দেশটিতে নানা সংকটও দেখা দিয়েছে। ইইউর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ও সবচেয়ে বড় অর্থনীতির জন্য এই নির্বাচন কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতা আনতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। নির্বাচনের প্রচারে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করা যেমন গুরুত্ব পাচ্ছে, তেমনি অভিবাসন ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গও জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম