আমরা তোমাদের সন্তানদেরকে জীবিত ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম: হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা ইসরাইলি বন্দিদের জীবিত রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলার কারণে তারা নিহত হন।
হামাসের দাবি, নেতানিয়াহুর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কারণেই এই বন্দিদের মৃত্যু হয়েছে।
হামাস বৃহস্পতিবার চার ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করার পর এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায়।
এর আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে রেড ক্রসের কাছে শিরি বিবাস নামে এক ইসরাইলি নারী, আরিয়েল ও কফির নামে তার দুই শিশু সন্তান এবং ওদেদ লিফশিৎজ নামে ৮৩ বছরের এক বৃদ্ধের মরদেহ হস্তান্তর করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা বন্দিদের জীবিত রাখার চেষ্টা করেছিল। তাদের যত্নও নিয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করেছিল। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে তাদের হত্যা করেছে।
সংগঠনটি বলেছে, ‘অপরাধী নেতানিয়াহু আজ তার বন্দিদের কফিনে ফেরত পেয়ে শোক প্রকাশ করছে। কিন্তু এটি কেবল তার নিজের দোষ ঢাকার অপচেষ্টা’।
নিহত ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারের উদ্দেশ্যে হামাসের বক্তব্য, ‘আমরা চেয়েছিলাম তোমাদের সন্তানদেরকে জীবিত ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু তোমাদের সেনাবাহিনী এবং সরকারই তাদের হত্যা করেছে’।
এর সম্পূর্ণ দায় নেতানিয়াহুর উল্লেখ করে সংগঠনটি বলেছে, ইসরাইলি সরকার বারবার বন্দি বিনিময় চুক্তিতে বাধা সৃষ্টি করায় তারাই এর সম্পূর্ণ দায় বহন করবে।
একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, জীবিত বন্দিদের ফেরত পেতে হলে শুধু বন্দি বিনিময় চুক্তিই একমাত্র পথ। ‘যদি ইসরাইলি সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে, তাহলে বন্দিরা আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে’।
এদিকে এক ফিলিস্তিনি মুখপাত্র জানান, হামাসের হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় ওই চারজনই জীবিত ছিলেন। কিন্তু ‘জায়নিস্ট দখলদার বাহিনীর বিমান হামলায়’ তারা নিহত হন।
এই মরদেহ হস্তান্তর হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ। যার আওতায় শত শত ফিলিস্তিনিকে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, অনেক ফিলিস্তিনি বিনা অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আটক রয়েছেন।
এদিকে ফিলিস্তিনি একটি সংগঠন জানিয়েছে, ইসরাইল এখনো কমপক্ষে ৬৬৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ আটকে রেখেছে। যাদের মধ্যে কয়েকজন ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে নিহত হয়েছিলেন।
চলমান গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপটি গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়। যা ইসরাইলের গণহত্যামূলক আগ্রাসন বন্ধ করে দেয়। এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৮,৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি