ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার জন্য সৌদি আরব-ই কেন উপযুক্ত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৪ পিএম

ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য কেন সৌদি আরবকে ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়াটা ইঙ্গিত দেয় যে, দেশটি কূটনৈতিকভাবে কতখানি এগিয়ে গেছে। ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের পর দেশটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে।
যদিও আন্তর্জাতিক ফোরামে মাঝে মাঝে সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তবুও বিনোদন ও খেলাধুলার মতো ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশটি বৈশ্বিক মঞ্চে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলছে।
কূটনৈতিক মোড় ও সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক
বাইডেন প্রশাসনের সময়ে সৌদি আরব তার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে। ওই সময়ে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করেছে। তবে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন সৌদি আরবের জন্য স্বস্তিদায়ক হয়েছে।
ট্রাম্পের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর ছিল সৌদি আরবেই এবং তার প্রশাসনের লেনদেনভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি বর্তমান সৌদি নেতৃত্বের জন্য সুবিধাজনক। ট্রাম্পের অন্যতম লক্ষ্য হলো সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। যা তার প্রথম মেয়াদে শুরু হওয়া আব্রাহাম চুক্তির চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে।
গাজা সংকট ও সৌদির অবস্থান
তবে গাজায় চলমান যুদ্ধ এই উদ্যোগের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সৌদি আরব দ্রুতই ট্রাম্পের ‘গাজা পুনর্গঠন ও ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার’ পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সেই সঙ্গে দেশটি অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে মিলে এমন একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে চায়, যাতে গাজার বাসিন্দারা তাদের জায়গায় থেকে যেতে পারেন এবং অঞ্চলটিও পুনর্গঠিত হয়। একইসঙ্গে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দিতে চায় মোহাম্মদ বিন সালমান প্রশাসন।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান নীতি গাজা ও পশ্চিম তীরের বিষয়ে সৌদির দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর এই মতপার্থক্য কীভাবে নিরসন হবে, সেটাই সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে।
তবে এটা স্পষ্ট যে, মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরব বৈশ্বিক কূটনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে ছুটে চলেছে। সূত্র: বিবিসি