দক্ষিণ কোরিয়ায় বিধ্বস্ত বিমানের দুই ইঞ্জিনেই হাঁসের ডিএনএ, তদন্তে নতুন মোড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৪ পিএম

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত মাসে বিধ্বস্ত হওয়া জেজু এয়ারের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানের দুই ইঞ্জিনেই হাঁসের ডিএনএ পাওয়া গেছে।
সোমবার প্রকাশিত ছয় পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, উভয় ইঞ্জিনে বাইকাল টিল নামে শীতকালীন পরিযায়ী হাঁসের নমুনা মিলেছে। তবে এটি দুর্ঘটনার মূল কারণ কিনা, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
গত ২৯ ডিসেম্বর, ব্যাংকক থেকে আসা ফ্লাইটটি দক্ষিণ কোরিয়ার মুআন বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের সময় রানওয়ে অতিক্রম করে মাটির বাঁধে ধাক্কা খায়। এতে প্লেনটি আগুন ধরে যায় ও আংশিক বিস্ফোরণ ঘটে। বিমানের ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র দুইজন বেঁচে ছিলেন, যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধাক্কার পর উভয় ইঞ্জিন মাটির নিচে ঢুকে যায় এবং প্লেনের সামনের অংশ ৩০০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বিমানের ধাক্কা লাগা বাঁধটি রানওয়ের নেভিগেশন সিস্টেমের অংশ ছিল, যা দুর্ঘটনাকে আরও প্রাণঘাতী করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ
দক্ষিণ কোরিয়ার এভিয়েশন ও রেলওয়ে অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন বোর্ড জানিয়েছে, ইঞ্জিন খোলা হবে এবং প্রতিটি যন্ত্রাংশের গভীর বিশ্লেষণ করা হবে। পাশাপাশি ফ্লাইট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের তথ্য পরীক্ষা, বার্ড স্ট্রাইক ও বাঁধের ভূমিকা মূল্যায়ন করা হবে।
তদন্তকারীরা বলছেন, পাইলটরা প্লেন অবতরণের সময় একটি পাখির ঝাঁক দেখতে পেয়েছিলেন, তবে ঠিক কখন বার্ড স্ট্রাইকের ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পাইলটরা ‘মে ডে’ সংকেত পাঠিয়েছিলেন এবং গ্লাইডপাথ থেকে সরতে বাধ্য হয়েছিলেন।
তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দুর্ঘটনার মাত্র চার মিনিট আগে ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) ও ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার (এফডিআর) বন্ধ হয়ে যায়, যা দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক তদন্তের অগ্রগতি
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, দুর্ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিবেদনটি শেয়ার করেছে। কারণ বিমান ও ইঞ্জিনের নির্মাতারা এই দেশগুলোর।
তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন এক বছরের মধ্যে প্রকাশ করার কথা রয়েছে।