এ সপ্তাহর মধ্যেই ইসরাইলের আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতকামী সংগঠন হামাস। এদিকে এই ঘোষণার পরপরই নেতানিয়াহু সরকার বলেছে, আজ (সোমবার) থেকে ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফেরা শুরু করতে পারবেন।

সোমবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এ কথা বলা হয়েছে।

মনে করা হচ্ছে, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতিতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। 

১৫ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলার পর ইসরাইল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। যেকোনো সময় চুক্তি ভেঙে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েই এই যুদ্ধবিরতি চলছে। যুদ্ধে গাজার বেশির ভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ছোট্ট এই ভূখণ্ডের প্রায় সব মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির পর গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরতে চাইছেন। এ জন্য তাদের নেৎজারিম করিডর পার হয়ে আসতে হবে। কিন্তু ইসরাইল সেখানে উপকূলীয় একটি মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। তারা উত্তর গাজায় ফিরতে চাওয়া ফিলিস্তিনিদের মহাসড়ক পার হতে দিচ্ছে না। 

ইসরাইলের অভিযোগ, বেসামরিক নারী জিম্মিদের মুক্তি না দিয়ে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস পথে ফিরে এসেছে এবং এই বৃহস্পতিবার আরও এক দফায় জিম্মিদের মুক্তি দেবে।

সেদিন তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। আরও তিন জিম্মিকে আগামী শনিবার মুক্তি দেওয়া হবে বলে ঠিকঠাক হয়েছে।

এদিকে গাজায় গাড়ি ও টং-গাড়িতে করে নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নেৎজারিম করিডরের কাছে অপেক্ষা করছেন। সেখানে রীতিমতো ভিড় জমে গেছে। ভিড় করা ফিলিস্তিনিরা নেৎজারিম করিডর পার হয়ে উত্তর গাজায় নিজেদের বাড়িঘরে ফেরার অপেক্ষা করছেন।

ইসরাইল এর আগে বলেছিল, হামাসের হাতে জিম্মি বেসামরিক নারী আরবেল ইয়েহুদকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তারা ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তরে ফিরতে বাধা দেবে।

আগামী বৃহস্পতিবার যে তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা, তাদের মধ্যে আরবেল ইয়েহুদও রয়েছেন।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাভিকেই অ্যাডরি সোমবার বলেছেন, গাজার উত্তরের বাসিন্দারা স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে পায়ে হেঁটে ফিরে আসা শুরু করতে পারবেন এবং সকাল ৯টা থেকে গাড়িতে করে ফিরতে পারবেন।

গাজায় চলমান এই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগার থেকে প্রায় ১ হাজার ৯০০ বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রথম ধাপের মেয়াদ হবে প্রায় ছয় সপ্তাহ।

যুদ্ধবিরতির আওতায় সর্বশেষ গত শনিবার চার ইসরাইলি নারী সেনাকে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে ইসরাইল প্রায় ২০০ কারাবন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বন্দীদের প্রায় সবাই ফিলিস্তিনি।