অস্ত্র রপ্তানিতে রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রের
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৮ পিএম
গত বছর বহির্বিশ্বে রেকর্ড পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ৩১ হাজার ৮৭০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করেছে দেশটি। শুক্রবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এর আগে কোনো বছর এত বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র
ও সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির হার ২৯ শতাংশ বেড়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেনের বিদায়ের এ বছরটিতে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে ৩টি মার্কিন কোম্পানির
যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম। এই কোম্পানিগুলো হলো লকহিড মার্টিন, জেনারেল ডায়নামিক্স
এবং নর্থরোপ গ্রুমান। ব্যাপকমাত্রায় বিক্রির ফলে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সত্ত্বেও
এই ৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম বছরজুড়েই চড়া ছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৪ সালে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বৃদ্ধির
প্রধান কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের জেরে ইউরোপসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন
মিত্রদেশ নিজেদের অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করার জন্য বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক
সরঞ্জামের ফরমায়েশ দিয়েছে মার্কিন বিভিন্ন অস্ত্র উৎপাদন কোম্পানির এজেন্টদের কাছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী,
গত বছর তুরস্কে ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার এবং ইসরাইলের কাছে ১ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার মূল্যের
এফ ১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে ওয়াশিংটন। একই সময়ে রোমানিয়ায়ি বিক্রি হয়েছে
বেশ কয়েকটি এম১এ২ আব্রামস ট্যাংক, যেগুলোর সম্মিলিত মূল্য ২৫০ কেটি ডলার।
পেন্টাগনের জানিয়েছে, ২০২৪ সালে কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে
২০ হাজার ৮০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগের
বছর বা ২০২৩ সালে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। আর সরকারি যোগাযোগের
মাধ্যমে ২০২৪ সালে ১১ হাজার ৭৯০ কোটি ডলারের সমরাস্ত্র ও সরঞ্জাম রপ্তানি করা হয়েছে।
২০২৩ সালে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৯০ মিলিয়ন ডলার।
২০২৪ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে মার্কিন অস্ত্র ক্রয়ের যেসব অর্ডার এসেছে,
সেসব মেটাতে এ বছর তো বটেই, সামনের বছরও গড়িয়ে যেতে পারে। কারণ এসব অর্ডারের মধ্যে
লাখ লাখ রাউন্ড গুলি ও আর্টিলারি গোলা, হাজার হাজার প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র এবং শত
শত সাঁজোয়া যান রয়েছে। কোনো দেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির কাছ থেকে অস্ত্র-সামরিক
সরঞ্জাম কিনতে চায় সেক্ষেত্রে দুটি পথ রয়েছে, কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা কিংবা
অস্ত্র কিনতে চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন
করা। অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে উভয় ক্ষেত্রেই সরকারের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে।