পারস্য উপসাগরে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের বিশাল সামরিক মহড়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) নৌবাহিনী শুক্রবার ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বুশেহর ও খুজেস্তান প্রদেশ জুড়ে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করেছে। ‘গ্রেট প্রফেট অথরিটি ১৯’ নামে এই মহড়া পারস্য উপসাগরের উত্তরে ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এবং হরমুজ প্রণালীতে পরিচালিত হচ্ছে। মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন আইআরজিসি নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলিরেজা টাংসিরি।
টাংসিরি জানান, ‘মহড়ার মূল উদ্দেশ্য প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে ‘‘শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা’’ পৌঁছে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক জলপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’।
তবে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘অঞ্চলের বাইরের দেশগুলোর উপস্থিতি এখানকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে এবং তারা এই স্পর্শকাতর অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে মিলে নিশ্চিত করতে সক্ষম এবং যে কোনো হুমকির বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলব। শত্রুরা আমাদেরকে দুর্বল ভাবলে তারা ভুল করবে। আমরা তাদের যে কোনো ষড়যন্ত্র কঠোরভাবে প্রতিহত করব।’
মহড়ার অংশ হিসেবে নতুন সামরিক প্রযুক্তি প্রদর্শনের কথাও জানিয়েছেন টাংসিরি। তিনি জানান, এবারের মহড়ায় এমন নৌযান ব্যবহৃত হচ্ছে যা ৭৫ থেকে ৯০ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম, এবং যা মিসাইল ও মাইন নিক্ষেপ করতে পারে।
এদিকে, ব্রিটিশ সামরিক সংস্থা ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস জানিয়েছে, পারস্য উপসাগরে নাবিকদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, সম্ভবত এটি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ‘গ্রেট প্রফেট ১৯’ মহড়ার অংশ।
এছাড়া, একটি মার্কিন পতাকাবাহী জাহাজ ‘লিবার্টি পাওয়ার’ পারস্য উপসাগরে ইরানের জলসীমার কাছে আসার পর সেটিকে ‘তাড়া’ করে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে কিছু প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরান সম্প্রতি টানা দুই মাস ধরে দেশজুড়ে সামরিক মহড়া পরিচালনা করছে। আ ইআরজিসি মুখপাত্র আলী মোহাম্মদ নাইনির মতে, এই বছর সামরিক মহড়ার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, যা বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এবারের মহড়া আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বড় পরিসরের ও উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন, যেখানে নতুন অস্ত্র ও বাস্তবসম্মত যুদ্ধ কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই মহড়া কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।