গাজায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে ইসরাইল: আইডিএফ প্রধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৫ এএম
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) প্রায় ১৫ মাসের গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানে হামাসের প্রায় ২০ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন আইডিএফের চিফ অব জেনারেল স্টাফ হার্জি হালেভি।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ১৫ মাসে ইসরাইল ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১ লাখ ১০ হাজার ফিলিস্তিনি।
তবে যুদ্ধবিরতির পর স্বাধীনতামী হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা প্রকাশ্যে এসে তাদের বিজয় উদযাপন করছে এবং নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয়, হামাস এখনও সামরিকভাবে শক্তিশালী এবং গাজায় তাদের প্রভাব বিরাজমান।
হালেভি জানান, হামাসের সামরিক শাখা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংগঠনের বেশিরভাগ নেতৃত্ব, যার মধ্যে প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ, নিহত হয়েছে। আইডিএফ প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
হিজবুল্লাহ ও পশ্চিম তীরে অভিযান
হালেভি আরও জানান, লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযানে আইডিএফ প্রায় ৪,০০০ সদস্যকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে সংগঠনের প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ রয়েছেন। এ ছাড়া, পশ্চিম তীরে অভিযানে ৭৯৪ জন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে।
হালেভির পদত্যাগ
মঙ্গলবার হার্জি হালেভি তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং জানান যে তার শেষ কার্যদিবস ২০২৫ সালের ৬ মার্চ। তিনি বাকি সময়ের মধ্যে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে হামাসের হামলার ওপর অভ্যন্তরীণ তদন্ত সম্পন্ন করবেন এবং দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উন্নত করার জন্য পদক্ষেপ নেবেন।
এই সামরিক অভিযান এবং নেতৃত্বের পরিবর্তন ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা কৌশল ও আঞ্চলিক পরিস্থিতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হালেভির পদত্যাগের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর, যা ইসরাইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ধরনের ফাঁক ও ব্যর্থতা তুলে ধরে, তার নেতৃত্বে আইডিএফ দেশের অভ্যন্তরে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়। হামাসের আক্রমণটি এতটাই বিস্তৃত ও পরিকল্পিত ছিল যে, সঠিক গোয়েন্দা তথ্যের অভাব এবং প্রস্তুতির অপ্রতুলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর ফলে হালেভি এবং তার নেতৃত্বের ওপর ইসরাইলি জনগণের আস্থা কমে যায়।
এছাড়া, গাজা এবং লেবাননে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এবং রাজনৈতিক সমাধানের গুরুত্বও উঠে এসেছে। বেশ কিছু সমালোচক মনে করছেন, কেবল সামরিক শক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়; বরং আঞ্চলিক কূটনীতি এবং রাজনৈতিক সমাধানও প্রয়োজন।