হামাস রোববারই ৩৩ জিম্মির মুক্তি দিতে প্রস্তুত, জানাল ইসরাইল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস রোববারই গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির অধীনে প্রথম ধাপের জিম্মিদের মুক্তি দিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইল।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অবরুদ্ধ গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধ উপত্যকাটির একটি বড় অংশ ধ্বংস করেছে। ইসরাইলি বাহিনী অব্যাহত আগ্রাসন চালিয়ে ৪৭,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে ২.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার বেশিরভাগকে বারবার বাস্তুচ্যুত করেছে। অবশেষে একটি চুক্তির মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী এই আগ্রাসনের সমাপ্তি হতে চলেছে।
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির মুখ্য পয়েন্টগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
প্রথম পর্যায়ে মুক্তি: চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। যার মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষরা অন্তর্ভুক্ত।
পালটা পদক্ষেপ হিসেবে ইসরাইল ১৯ বছরের কম বয়সি ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে। এক্ষেত্রে মুক্তি পেতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৯৯০ থেকে ১,৬৫০-এর মধ্যে হতে পারে।
ইসরাইলি মন্ত্রিসভার অনুমোদন
চুক্তিটি ইসরাইলি নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা শুক্রবার অনুমোদন দিয়েছে। শুক্রবার এটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন ও আলোচনার জন্য উত্থাপন করা হয়।
মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির পরিকল্পনা
এই চুক্তির মাধ্যমে গাজায় মানবিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক সাহায্য প্রবেশের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
যুদ্ধবিরতিতে বাধা ও সমালোচনা
নেতানিয়াহুর সরকার এবং নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদন দিলেও গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ইসরাইলি মন্ত্রিসভার কিছু সদস্য। তারা একে হামাসের প্রতি ‘আপস’ হিসেবে দেখছেন।
তবে হামাস দাবি করেছে, এই চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত সব ধরনের বাধা সমাধান করা হয়েছে।
পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত
এতো সবকিছুর পরও গাজার পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত। কারণ চুক্তির বিষয়ে যৌথ ঘোষণার পরেও গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার মাত্র একদিনেই গাজায় ১০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ৫৮ জনই নারী ও শিশু।
তথাপি এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। যদিও এর বাস্তবায়ন এবং সফলতা এখনো অনিশ্চিত। এটি কার্যকরে এখনো ইসরাইলসহ বিভিন্ন পক্ষের সমর্থন প্রয়োজন।