স্বাধীন হওয়ার উচ্চাশা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য হবে না গ্রিনল্যান্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৯ এএম
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন/সংগৃহীত
ক্ষমতার মসনদে এখনও বসেননি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এর আগেই বিভিন্ন দেশ নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় চলে আসছেন তিনি। দিনকয়েক আগে কানাডাকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর কথা বলেছিলেন। এবার বললেন, জোর করে হলেও গ্রিনল্যান্ডের দখল নেওয়ার কথা।
এমন মন্তব্য করার পরপরই বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন।
বুধবার রাসমুসেন বলেন, ‘অধিবাসীরা চাইলে গ্রিনল্যান্ড স্বাধীন হতে পারে, কিন্তু তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য হবে না।’ ট্রাম্পের মন্তব্যের পর ডেনমার্কের রাজার সঙ্গে গ্রিনল্যান্ডের নেতার কোপেনহেগেনে বৈঠক হয়েছে।
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার আগেই গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে কড়া হুমকি-ধামকি শুরু করেছেন তিনি। মঙ্গলবার ট্রাম্প ডেনমার্ককে হুমকি দিয়ে বলেন, গ্রিনল্যান্ড দিতে না চাইলে ডেনমার্কের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করা হবে। এমনকি সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে গ্রিনল্যান্ড দখলের সম্ভাবনাও নাকচ করেননি তিনি।ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন। এ কারণে তিনি দ্বীপটি কেনার ইচ্ছা বারবার প্রকাশ করেছেন, যদিও প্রত্যেকবারই তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড প্রায় ৬০০ বছর ধরে ডেনমার্কের অংশ। ৫৭ হাজার জনসংখ্যার দেশটি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা লাভ করা।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি স্বীকার করি যে, গ্রিনল্যান্ডের নিজস্ব উচ্চাকাঙ্খা আছে। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে গ্রিনল্যান্ড স্বাধীন হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল স্টেট হওয়ার উচ্চাকাঙ্খা আদৌ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘চীন ও রাশিয়ার তৎপরতার কারণে আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়াটা বাস্তব। আমি মনে করি না যে, আমরা পররাষ্ট্রনীতির সংকটে আছি। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চাকাঙ্খা পূরণ নিশ্চিত করতে আমরা কীভাবে আরও সহযোগিতা করতে পারি তা নিয়ে তাদের সঙ্গে সংলাপের জন্য আমরা প্রস্তুত।’
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেন, ট্রাম্পের উচ্চাকাঙ্খা তাকে গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন সামরিক অভিযান চালানোর দিকে ঠেলে দেবে, এটা তিনি ভাবতেও পারেন না।
এদিকে, গ্রিনল্যান্ডের অনেকেই ডেনমার্ক থেকে স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও ডেনিশ রাজা এখনও দ্বীপটিতে জনপ্রিয়। এক স্থানীয় অধিবাসী বলেছেন, ‘তিনি (রাজা) জনপ্রিয়। সুতরাং, তিনি স্পষ্টতই ডেনিশ-গ্রিনল্যান্ড সম্পর্ক রক্ষায় সহায়ক হতে পারবেন।’