সুদানের আরএসএফ বাহিনীর শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
সুদানের র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) শীর্ষনেতা মোহাম্মদ হামদান হেমেদতি দাগালোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের বলেছে, চলমান গৃহযুদ্ধে আধাসামরিক গোষ্ঠীটি গণহত্যা চালাচ্ছে।
একইসঙ্গে আরব আমিরাতভিত্তিক বেশ কয়েকটি কোম্পানিকেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। অভিযোগ রয়েছে, এসব কোম্পানি আরএসএফকে অস্ত্র সরবরাহ করছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়াহ।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানে গৃহযুদ্ধ চলছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সুদানে বিশ্বের ভয়াবহতম একটি মানবিক বিপর্যয় হয়েছে বলে মনে করা হয়।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, আরএসএফ এবং তাদের সমর্থনকারী মিলিশিয়ারা বেসামরিক নাগরিকদের উপর সরাসরি আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, আরএসএফ এবং সহযোগী মিলিশিয়ারা পরিকল্পিতভাবে পুরুষ ও বালক-এমনকি শিশুকেও জাতিগত ভিত্তিতে হত্যা করেছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর নারী ও মেয়েদেরকে ধর্ষণ ও অন্যান্য ধরনের নৃশংস যৌন সহিংসতার জন্য লক্ষ্যবস্তু করেছে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, এই মিলিশিয়ারা পালিয়ে আসা বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে, সংঘাত থেকে পালানোর চেষ্টা করা নিরপরাধ লোকদের হত্যা করেছে এবং অবশিষ্ট বেসামরিকদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহ করতে বাধা দিয়েছে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে, আমি এখন উপসংহারে পৌঁছেছি যে আরএসএফ এবং সহযোগী মিলিশিয়ারা সুদানে গণহত্যা করেছে।
শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক আরও সতর্ক করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুদানের জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংসতাকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পদক্ষেপের মূল্যায়ন অব্যাহত রাখবে।
বিঙ্কেনের দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুদানের গৃহযুদ্ধের কোনও পক্ষকে সমর্থন করে না।
এছাড়া ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি আদেয়েমো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতের অবসানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে যা নিরপরাধ বেসামরিক মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেজারি বিভাগ সুদানের জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ) এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান হেমেদতি দাগালোর অনুসারী আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই চলছে।
একসময় মিত্র ছিল দুই বাহিনী। ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তারা। কিন্তু আরএসএফকে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা নিয়ে পরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে।