উপনিবেশবাদের পতন: ফরাসি সেনা বহিষ্কার করল আফ্রিকার যেসব দেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম
আফ্রিকার দেশ মালি, নাইজার, বুরকিনা ফাসো, চাদ ও সেনেগালের পর সম্প্রতি আইভরি কোস্টও তাদের দেশ থেকে ফরাসি সেনাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে।
আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট আলাসসানে ওয়াত্তারা মঙ্গলবার রাতে তার দেশের জনগণকে সম্বোধন করে ২০২৪ সালের সর্বশেষ ভাষণ দেন।
ওই ভাষণে তিনি বলেন, ফরাসি বাহিনীর কেন্দ্রিয় দপ্তর আবিদজানের পোর্ট বোয়ে বন্দরে ৪৩তম বিমা (BIMA) মেরিন ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নকে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আইভরি কোস্টের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আইভরি কোস্টে বর্তমানে ফ্রান্সের ৬০০ সেনা সদস্য রয়েছে। সাবেক ফরাসি ঔপনিবেশিক দেশগুলোতে ফ্রান্সবিরোধী মনোভাব তীব্রতর হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে দেশটির সরকার গত নভেম্বরে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে তাদের সামরিক উপস্থিতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইভরি কোস্টে ফরাসি সেনাসংখ্যা এখন ২২০০ থেকে ৬০০-তে নেমে এসেছে। এখন সেই সেনাদেরকেও আইভরি কোস্ট ছাড়তে হবে।
ফরাসি সরকার ভেবেছিল যে, তাদের সেনাসংখ্যা কমিয়ে এখনও তারা আফ্রিকায় তাদের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখতে পারবে। কিন্তু ফ্রান্সের সেই কৌশলও ব্যর্থ হচ্ছে।
ফ্রান্সের সেনাদেরকে এখন আফ্রিকার শতকরা ৭০ ভাগেরও বেশি দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, যেসব দেশে তাদের সামরিক উপস্থিতি ছিল। ইউরোপীয় এই বৃহৎ উপনিবেশবাদীদের এখন মাত্র দেড় হাজার সেনা রয়েছে জিবুতিতে। আর সাড়ে ৩শ সৈন্য রয়েছে গ্যাবনে। এই অঞ্চলগুলোতেও ফ্রান্সবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে।
মালি, নাইজার এবং বুরকিনা ফাসোর রাষ্ট্রপ্রধানরা ফরাসি সেনাদের বহিষ্কারের পর রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকার দেশগুলো প্যারিসের শৃঙ্খল থেকে নিজেদের মুক্ত করে স্বাধীন ভাবমূর্তি অর্জন করতে শুরু করেছে।
আফ্রিকার দেশগুলোতে ভ্রমণের সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বারবার এ কথার ওপর জোর দিয়েছিলেন যে, প্যারিস আপনাদের শত্রু নয়। ম্যাক্রোঁ মূলত আফ্রিকার সাবেক উপনিবেশগুলোতে ফ্রান্সের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করার চিন্তা করতে দেরি করে ফেলেছেন।
তরুণ আফ্রিকানদের মধ্যে ফ্রান্সের প্রতি যে ঘৃণা জন্ম নিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করার কথা ভাবছে ফ্রান্স। সূত্র: তাসনিম নিউজ