গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত সিরিয়ার ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি করতে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং একটি সাংবিধানিক পরিষদ গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (এসডিএফ) মহাসচিব মাহমুদ মেরহি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সিরিয়ার ভবিষ্যৎ কোনো একক পক্ষ দ্বারা নির্ধারিত হওয়া উচিত নয়। কারণ সিরিয়া একটি বৈচিত্র্যময় দেশ এবং এই বৈচিত্র্যকে সম্মান করতে হবে।
তিনি যোগ করেন, ‘দেশ গঠনে কোনো পক্ষকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া উচিত নয়। কেননা সিরিয়ার জনগণই তাদের সংবিধান নির্ধারণ করবে’।
মাহমুদ মেরহি এ সময় সবাইকে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে পরামর্শ ও আলোচনা করার আহ্বান জানান। বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকারের মধ্যে যোগাযোগ ও বোঝাপড়া হওয়া উচিত’।
এসডিএফ মহাসচিব বলেন, যদি আমরা সিরিয়ার সম্পদ জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে পারি এবং অবরোধ তুলে নিতে পারি, তাহলে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
সেই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন যে, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সামর্থ্য ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাহমুদ মেরহি বলেন, ‘আমাদের আর এমন কোনো সেনাবাহিনী নেই, যা দখলদার ইসরাইলি আগ্রাসনের মুখোমুখি হতে পারে। এখন দেশে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে’।
এ সময় ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানান তিনি। একই সঙ্গে জাতিসংঘকে সিরিয়ার গোলান মালভূমির সীমান্তের বাফার জোনে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মেরহি।
জাতীয় বাহিনীর বিবৃতি
এদিকে সিরিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও জাতীয় ব্যক্তিত্বদের একটি দল দেশটির সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।
তারা বলেছে, ‘ইসরাইলি আগ্রাসন এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সামর্থ্য ধ্বংস করা একটি তাত্ক্ষণিক হুমকি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এ বিষয়ে খুবই দুঃখজনক’।
একই সঙ্গে তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৫৪ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পরিচালনার নির্দেশ দেয়।
আরব দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
সিরিয় জাতীয় নেতৃত্বের যৌথ বিবৃতিতে আরব দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং প্রয়োজনে আরব বাহিনী পাঠিয়ে ইসরাইলের দক্ষিণ সিরিয়া দখল প্রতিহত করে।
সংঘর্ষ বন্ধের অঙ্গীকার
পাশাপাশি ওই বিবৃতিতে আহমদ আল-শারা (আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি) ঘোষিত প্রতিশ্রুতিগুলোও বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সিরিয়ার ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংরক্ষণ, সাম্প্রদায়িক উস্কানি নিষিদ্ধ করা এবং সিরিয় নাগরিকদের রক্তপাত বন্ধ করা।
বিবৃতিতে দেশটির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী ৪৩টি সংস্থা ও ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন। সূত্র: আল মায়াদিন