পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা এবং দেশটির ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তোশাখানা ২.০ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডির বিশেষ আদালতে তোশাখানা ২.০ মামলায় তাদেরকে অভিযুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।

আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে এই শুনানি পরিচালনা করেন। ইমরান খান ইতোমধ্যেই সেখানে বন্দি রয়েছেন। 

এদিন অভিযুক্তদের সামনে অভিযোগগুলো পড়ে শোনানোর পর মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।

অভিযোগ:

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরের সময় বুশরা বিবি একটি বুলগারি গহনার সেট উপহার পান। এই সেটটিতে একটি নেকলেস, এক জোড়া কানের দুল, একটি ব্রেসলেট এবং একটি আংটি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ইমরান খান এবং বুশরা বিবি এই গহনাগুলো অবৈধভাবে নিজেদের কাছে রেখে দেন এবং তা তোশাখানায় জমা দেননি।

আর্থিক ক্ষতি:

অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, ওই গহনার বাজার মূল্য প্রায় ৭ কোটি ৫৬ লাখ রুপি। তবে সেটিকে কম মূল্যায়ন করে মাত্র ৩ কোটি ৫৭ লাখ রুপি দেওয়া হয়। এর ফলে রাষ্ট্রের তহবিলে ৩ কোটি ২৮ লাখ রুপির ক্ষতি হয়েছে।

আইনি ধারাসমূহ:

ইমরান খান এবং বুশরা বিবির বিরুদ্ধে জাতীয় জবাবদিহিতা অধ্যাদেশ (NAB) ১৯৯৯-এর ৯ নম্বর ধারা এবং এর বিভিন্ন উপধারার আওতায় মামলা করা হয়েছে।

ইমরান খান ইতোমধ্যে আদিয়ালা কারাগারে একাধিক মামলায় বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত মামলাটি ছিল ইদ্দত মামলা। যার জন্য তিনি প্রথমে গ্রেফতার হন।

এদিকে বুশরা বিবি ইদ্দত মামলা থেকে মুক্তি পেলেও তোশাখানা ২.০ মামলায় তাকে পুনরায় আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

এদিকে পিটিআই-এর শীর্ষ নেতা শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং ইয়াসমিন রশিদরা আজ লাহোরে একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে ৯ মে’র সহিংসতায় তাদের ভূমিকার জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন।

পাকিস্তানে তোশাখানা সংক্রান্ত বিতর্ক নতুন নয়। দেশটির রাষ্ট্রপ্রধানরা প্রায়শই উপহার গ্রহণ ও তাদের মূল্যায়ন নিয়ে আইনি বিতর্কের মুখোমুখি হন। ইমরান খান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো:

• প্রসিকিউশনের প্রমাণ ও যুক্তি।
• অভিযুক্তদের প্রতিরক্ষা কৌশল।
• এ মামলার রাজনৈতিক প্রভাব এবং আসন্ন নির্বাচনে পিটিআই-এর অবস্থান।

আলোচিত এই মামলা পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক ও আইনগত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে এবং পিটিআই নেতৃত্বের ওপরও চাপ বাড়াচ্ছে। সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন