২ রোগীকে রাস্তায় ফেলে দিল হাসপাতালের কর্মীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ পিএম
ভারতের বিহারে একটি সরকারি হাসপাতালের সাতজন কর্মী ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের দুই কর্মী নাকি কর্মকর্তাদের নির্দেশে দুই রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে কোনো অজ্ঞাত জায়গায় ফেলে দিয়েছেন।
সেই দুই রোগীর মধ্যে একজনের দেহ ইতোমধ্যেই উদ্ধার করা হলেও অন্যজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হচ্ছে।
গত ১২ নভেম্বর বিহারের বারুন থানার পুলিশ স্থানীয় পোখারি মন্দিরের কাছে ৫০ বছরের এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দেহটি লাল-সাদা রঙের একটি চাদরে মোড়া ছিল। সেই চাদের লেখা ছিল- রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য মিশন! তদন্তে নেমে পুলিশ একজন প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধান পায়। তার কাছ থেকে জানা যায়, তিনি পোখারির দিক থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেখেছিলেন। সেই অ্যাম্বুলেন্স থেকেই চাদরে মোড়া কিছু একটা রাস্তার পাশে ছুড়ে ফেলা হয়। তারপর অ্যাম্বুলেন্সটি সিরিসের দিকে চলে যায়।
এরপর পুলিশ সেই দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বরুন থানার কর্মকর্তা সৌরভ কুমার জানিয়েছেন, এ ঘটনায় গত ১৪ নভেম্বর রিপোর্ট দায়ের করা হয়। মৃতদেহের বর্ণনা চারিদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়; কিন্তু এখনো পর্যন্ত ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
ঘটনার তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্তকারী দল গঠন করে দেয় জেলা প্রশাসন। সেই তদন্তে উঠে আসে যে দুই অজ্ঞাত পরিচয় রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে বাইরে ফেলে আসা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই তদন্তকারী দলের সদস্যরা তাদের রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কাছে জমা করেছেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মোট সাতজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার দায়ের হওয়া সেই অভিযোগে নাম রয়েছে- মডেল সদর হাসাপাতালের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট এবং ম্যানেজারের।
সৌরভ কুমার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই তদন্তকারীরা ওই হাসপাতালের ভিতরের ও বাইরের এবং যেখান থেকে একটি দেহ উদ্ধার হয়েছিল সেই এলাকার আশপাশের সব জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের দুই কর্মী দুইজন রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে রওনা দিচ্ছেন।
হাসপাতালের ম্যানেজার হেমন্ত রাজনকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন, ওই দুই রোগী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাই তাদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে; কিন্তু সেই সংক্রান্ত কোনো নথি তিনি দেখাতে পারেননি।
পরবর্তীতে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট দুই কর্মীকে জেরা করা হলে তারা সব কীর্তি ফাঁস করে দেন বলে দাবি পুলিশের। ওই দুই কর্মী স্বীকার করেছেন, ঘটনার সময় ওই দুই রোগী জীবিত ছিলেন। এমনকি তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা যথেষ্ট ভালো ছিল। তবে অন্যজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।
ওই দুই কর্মীর দাবি, কর্মকর্তাদের নির্দেশেই তারা প্রথম রোগীকে টেংরা মোড় এলাকায় ফেলে দেন। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীটিকে চাদরে মুড়ে একটি মন্দিরের কাছে ফেলে আসেন। পরে সেই রোগীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।