সামরিক আইনের ঘোষণা তুলে নিতে বাধ্য হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ এএম

পার্লামেন্ট সদস্যদের বিরোধিতা, সামরিক বাহিনীর অসহযোগিতা ও ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সামরিক আইন জারির আদেশ তুলে নিতে বাধ্য হলেন। এ বিষয়ে পার্লামেন্টে ভোটের পর তিনি বলেন, সামরিক আইনের অবসান ঘটাতে পার্লামেন্টের অবস্থান তিনি মেনে নেবেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ আইন প্রত্যাহার করা হবে।
টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওল বলেন, পার্লামেন্টের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি সামরিক আইন প্রত্যাহারের কথা সামরিক বাহিনীকে জানিয়েছি।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, পার্লামেন্টের প্রস্তাব গ্রহণ ও সামরিক আইন প্রত্যাহার করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠক করছে। বৈঠকের পর সামরিক আইন তুলে নেওয়া হবে।
দেশটির সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মন্ত্রিসভা সামরিক আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। অবিলম্বে আগের আদেশ বাতিল হয়ে যাবে।
এর আগে মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ায় জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। তিনি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘কমিউনিস্ট বাহিনীর’ হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইউন সুক-ইওল আরও বলেন, উদারপন্থী দক্ষিণ কোরিয়াকে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন শক্তি নির্মূল করতে আমি জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করছি।
এই আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু–কে। দেশটিতে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়।
তবে আকস্মিকভাবে সামরিক শাসন জারির আদেশ মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা। দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির পর দেশটির পার্লামেন্ট ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতারের দাবিতে তাদের স্লোগান দিতে শোনা যায়। একপর্যায়ে কিছু সময়ের জন্য পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন সেনাসদস্যরা। ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার নামতেও দেখা যায়।
এই পরিস্থিতির মধ্যেও রাতেই নিরাপত্তা বাহিনীকে এড়িয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করতে সক্ষম হন ১৯০ জন আইনপ্রণেতা। তারা সামরিক আইন জারির বিরুদ্ধে ভোট দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে বেশির ভাগ সদস্য চাইলে সামরিক আইন তুলে নেওয়া যাবে।