বেলজিয়ামে মাতৃত্বকালীন ছুটি-ভাতা পাবেন যৌনকর্মীরা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ পিএম
ফাইল ছবি
যৌনকর্মীদের জন্য নতুন আইন পাশ হলো বেলজিয়ামে। এই আইনে যৌনকর্মীরা এখন মাতৃত্বকালীন ছুটি ও অবসরভাতা পাবেন। বিশ্বে এই প্রথম এ ধরনের কোনো আইন চালু হয়েছে। নতুন আইনে, যৌনকর্মীরাও আনুষ্ঠানিক নিয়োগ চুক্তি, স্বাস্থ্যবিমা, অবসরভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং অসুস্থতার জন্য ছুটির আবেদন করার যোগ্য হবেন। মূলত এ কাজকে অন্য যে কোনো চাকরির মতো গণ্য করা হবে। রোববার বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।
২০২২ সালে বেলজিয়ামে যৌন পেশাকে বৈধতা দেওয়া হয়। জার্মানি, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, তুরস্কসহ আরও কয়েকটি দেশে যৌনবৃত্তি এখন বৈধ। কিন্তু পেশাজীবী হিসাবে যৌনকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের চুক্তির আওতায় আনার ঘটনা বেলজিয়ামেই প্রথম। এ বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক এরিন কিলব্রিডে বলেন, ‘এটা আমূল পরিবর্তন এবং এটা বিশ্বে এখন পর্যন্ত আমার দেখা সেরা পদক্ষেপ। প্রতিটি দেশকে আমাদের এ লক্ষ্য অর্জনে রাজি করাতে হবে।’
বেলজিয়ামে ভাসমান যৌনকর্মীদের সহায়তায় কাজ করে বেসরকারি সংস্থা ‘ইসালা’। সংস্থাটিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করেন জুলিয়া ক্রুমি রে। তিনি বলেন, ‘এটা বিপজ্জনক। কারণ, এটি এমন একটি পেশাকে স্বাভাবিকের মর্যাদা দিচ্ছে, যে পেশার মূলে সর্বদাই ছিল নৃশংসতা।’ বেলজিয়ামে নতুন আইনে যৌনকর্মী ও গ্রাহকদের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করাকেও বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিবর্তনে কিছুটা সহজ হবে জীবন, এমনটাই আশা করছেন যৌনকর্মীরা।
নিজের জীবন সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে বেলজিয়ামের যৌনকর্মী সোফিয়া বলেন, ‘আমি যখন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখনো আমাকে কাজ করতে হয়েছে। সন্তানের জন্ম দেওয়ার এক সপ্তাহ আগেও গ্রাহকের সঙ্গে আমাকে শারীরিক সম্পর্ক করতে হয়েছে।’ সোফিয়ার পাঁচটি সন্তান রয়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এ নারীর পঞ্চম সন্তানের জন্ম হয়। সেবার চিকিৎসক তাকে ছয় সপ্তাহের জন্য সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সে সুযোগ পাননি। তাকে দ্রুত কাজে ফিরতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘কাজ বন্ধ রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না। কারণ, আমার অর্থের প্রয়োজন।’ নতুন আইন পাস হওয়া নিয়ে সোফিয়া জানান, ‘এটা আমাদের জন্য মানুষ হিসাবে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ার সুযোগ।’