Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

পিটিআই বিক্ষোভকারীদের ইসলামাবাদে প্রবেশ, সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহত

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ এএম

পিটিআই  বিক্ষোভকারীদের ইসলামাবাদে প্রবেশ, সংঘর্ষে কনস্টেবল নিহত

কারাবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মীদের বিক্ষোভ মিছিলগুলো রাজধানী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেছে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষে এক কনস্টেবল নিহত হয়েছেন এবং ৭০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

সোমবার খাইবার পাখতুনখাওয়া (কে-পি) প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ডাপুর এবং বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুবের নেতৃত্বে পিটিআই বিক্ষোভ মিছিলগুলো হাজারা ইন্টারচেঞ্জ থেকে ইসলামাবাদে যাত্রা শুরু করে। 

কারাবন্দি ইমরান খানকে মুক্ত করতে তার স্ত্রী বুশরা বিবির ডাকে সাড়া দিয়ে এই বিক্ষোভ মিছিলগুলো ডি-চক অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছিল।

যাত্রাপথে গাজি ব্রোথা ব্রিজে পুলিশি বাধার মুখে মিছিলগুলোকে তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয়। ওমর আইয়ুবের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ মিছিল পাঞ্জাব পুলিশকে পিছু হটতে বাধ্য করে এবং আলি আমিন গান্ডাপুরের নেতৃত্বাধীন হাজারা ডিভিশনের বিক্ষোভ মিছিলও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়।

পুলিশ ও পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষ

হজারা মোটরওয়েতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পিটিআই কর্মীরা পুলিশের ওপর পাথর ছুঁড়েছে। সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। ডিএসপি চৌধুরী জুলফিকার, শাহিদ গিলানি এবং এএসআই তাবাসসুমসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।

কনস্টেবলের মৃত্যু

পিটিআই কর্মীদের হামলায় মোবাশির নামে ৪৬ বছর বয়সি এক কনস্টেবল গুরুতর আহত হয়েছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল। নিহত মোবাশিরের পরিবারে রয়েছেন তার স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং এক ছেলে।

চার দফা দাবি বিক্ষোভ প্রতিবাদ অব্যাহত: 

পিটিআই কর্মীরা এই বিক্ষোভ প্রতিবাদ আয়োজন করেছে মূলত চারটি দাবিতে:

১) ইমরান খানসহ সব রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি, 

২) ২৬তম সংবিধান সংশোধনী প্রত্যাহার,

৩) দেশের গণতন্ত্র এবং সংবিধানের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং

৪) ‘চুরি হওয়া ম্যান্ডেট’ পুনরুদ্ধার।

বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই চার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তার দলের কর্মীদের ইসলামাবাদে পৌঁছানোর এবং তার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সরকারের পদক্ষেপ

পাকিস্তান সরকার ইসলামাবাদ ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে কন্টেইনার বসিয়ে প্রধান সড়কগুলো অবরুদ্ধ করেছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

তা সত্ত্বেও পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান এবং কে-পি থেকে পিটিআই কর্মীরা ইসলামাবাদ অভিমুখে লং মার্চ করেছে। রাওয়ালপিন্ডি, লাহোর, গুজরানওয়ালা এবং সিয়ালকোটসহ বিভিন্ন শহর থেকে কর্মীরা এতে যোগ দিয়েছে।

পুলিশ ও রেঞ্জার্স মোতায়েন

দেশটির অন্তর্বর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি জানিয়েছেন, পুলিশের পাশাপাশি রেঞ্জার্স এবং ফ্রন্টিয়ার বাহিনীর সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। 

নাকভি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনসাধারণের জানমাল সুরক্ষায় সবধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

গ্রেফতার ও সংঘর্ষের তথ্য

পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রায় ৬০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইসলামাবাদে প্রবেশের পথে পিটিআই কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।

চূড়ান্ত ডাক

পিটিআই নেতা আলি আমিন গান্ডাপুর বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ইমরান খানের মুক্তি এবং এর জন্য আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে’।

কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে গান্ডাপুর বলেছেন, আমরা পিছু হটব না এবং ইসলামাবাদ পৌঁছানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। 

অর্থাৎ সরকার এবং পিটিআই উভয়ই তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এর ফলে দেশটিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে এবং সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম