মানসিক সমস্যায় ভুগছে ইসরাইলি সেনারা, ৬ সেনার আত্মহত্যা

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম

অবরুদ্ধ গাজা। এ যেন ভয়ঙ্কর এক মৃত্যুপুরি। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই লাশের মিছিল। ইট-পাথর ও ক্রংকিটের নিচে শরীরে ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ। ইসরাইলি বাহিনীদের একটি একটি বোমার আঘাতে ঝরে গেছে নিরীহ সব তাজা প্রাণ। তবে গাজাবাসীর এমন করুণ দৃশ্যে মানসিকভাবে আবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ইসরাইলি সেনারাও।
সম্প্রতি গাজা ও লেবাননে যুদ্ধের জেরে ইসরাইলের কমপক্ষে ছয় সেনা আত্মহত্যা করেছেন। দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ থেকে সৃষ্ট গুরুতর মানসিক যন্ত্রণাকে সেনাদের আত্মহত্যার প্রাথমিক কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আনাদুলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসা নিচ্ছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর আরও হাজার-হাজার সদস্য। এই তথ্য প্রকাশ করেছে দেশটির একটি সংবাদ মাধ্যম। তবে আত্মহত্যার সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মানসিক সমস্যায় ভোগা তিন ভাগের এক ভাগ সেনার মধ্যেই রয়েছে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের লক্ষণ।
তাদের দাবি চলমান যুদ্ধে আহত সেনার চেয়ে মানসিক রোগে ভুগছে এমন সেনার সংখ্যা বেশি। এক তদন্ত রিপোর্টের তথ্য অনুসারে, মানসিক আঘাতে ভুগছেন এমন সৈন্যের সংখ্যা যুদ্ধে শারীরিক আঘাতপ্রাপ্তদের ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইয়েডিওথ আহরোনোথ বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে বলেছে- যে সামরিক অভিযান শেষ হয়ে গেলে এবং সেনারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পরে এই মানসিক স্বাস্থ্য সংকট কেটে যাবে।
এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে গ্রেফতার হতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০নং ডাউনিং স্ট্রিট। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর শুক্রবার ডাউনিং স্ট্রিট এমন ইঙ্গিত দিল।
ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে নেতানিয়াহুকে আটক করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ‘পরিস্থিতিগত প্রশ্নে’ মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
তবে তিনি বলেছেন, ‘ব্রিটিশ সরকার তার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীন থাকা বাধ্যবাধকতাগুলো সব সময়ই মেনে চলে যুক্তরাজ্য সরকার। গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু ও ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। চুক্তি অনুযায়ী, এ আদালতের সদস্য দেশগুলো এই পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধ্য। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যও রয়েছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরই ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছিল, যুক্তরাজ্যের সরকার আইসিসির স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রাখবে তারা। যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০১ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ এ আদালত যদি কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন, তাহলে একজন মনোনীত মন্ত্রী অনুরোধটি একজন উপযুক্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে পাঠান। ওই বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পরোয়ানাটি যুক্তরাজ্যে কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।