Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

১০০০ দিন ধরে চলছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, ভবিষ্যৎ কী?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম

১০০০ দিন ধরে চলছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, ভবিষ্যৎ কী?

ছবি: সংগৃহীত

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। সেই হিসাবে আজ (মঙ্গলবার) এই যুদ্ধের এক হাজার দিন পূর্ণ হলো। এক হাজার দিন পরেও বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই চলছে। এখনও কিয়েভে মাঝে মধ্যেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হচ্ছে। 

এই পরিস্থিতিতে আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে আবার প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে জো বাইডেন রাশিয়ার ভেতরে মার্কিন রকেট হামলা করার অনুমতি ইউক্রেনকে দিয়ে দিয়েছে। আর রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, এরকম আক্রমণ হলে তার উপযুক্ত ও কড়া জবাব দেওয়া হবে। 

তবে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এসে এই নীতির পরিবর্তন করতে পারেন। সমর-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু এই পদক্ষেপ নিলে ৩৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির বদল হবে না।

এই যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। লাখ লাখ মানুষ বাইরের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সবচেয়ে বড় সংঘাত। এর ফলে সামরিক দিক থেকে কার কত ক্ষতি হয়েছে তা গোপন রাখা হয়েছে। গোযেন্দাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে পশ্চিমা দেশগুলো যে হিসাব করেছে, তাতে এক দেশের হিসাবের সঙ্গে অন্য দেশের হিসাবের ব্যাপক ফারাক রয়েছে। তবে সব রিপোর্টই বলছে, দুপক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের প্রতিটি অঞ্চলে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই যুদ্ধের সময় শোক নেমে এসেছে। বড় শহর থেকে দূরের গ্রাম পর্যন্ত সব জায়গায় সামরিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়মিত হয়েছে, রাতেও বারবার সাইরেন বেজেছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করেছেন। ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প আসার পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তিনি এবার এই যুদ্ধ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন?  প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়ার নীতির, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কী হবে?

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দুদেশের মধ্যে কোনোরকম আলোচনা হয়নি। সম্ভাব্য আলোচনার আগে দুদেশই তাদের শক্তি বাড়িয়ে নিতে চাইতে পারে। ইউক্রেন ও রাশিয়া চাইবে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের আরো কিছুটা জমি দখল করে নিয়ে আলোচনায় বসতে।

রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে ড্রোন পেয়েছে। কুরস্কে উত্তর কোরিয়ার ১১ হাজারের মতো সেনাও যুদ্ধে নেমে পড়েছে। কিয়েভের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া এক লাখ সেনা পাঠাবার ক্ষমতা রাখে।

ইউক্রেন আবার আগস্ট থেকে রাশিয়ার কুরস্কের একটা অংশ দখল করে রেখেছে। সেখানে তারা সবচেয়ে দক্ষ সেনা পাঠিয়েছে। 

ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া সেখানে ৫০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। তাছাড়া তারা পূর্ব ইউক্রেনেও দ্রুত কিছু এলাকা দখল করতে চায়।

ক্রমশ শীত আসছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাশিয়া একদিনে ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০টি ড্রোন দিয়ে আক্রমণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গভীরে মার্কিন রকেট দিয়ে হামলার অনুমতি দেওয়া, ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সাহায্য দেয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

গত দুই বছরে ইউক্রেনের অর্থনীতিতে মাঝারি বৃদ্ধি হয়েছে। তা সত্ত্বেও যুদ্ধের আগের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করলে ইউক্রেনের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে, ইস্পাত শিল্প ও কৃষিক্ষেত্র।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, আগামী বছর কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। তবে যে কোনো আলোচনা শুরুর আগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে এবং ইউক্রেনকে উপযুক্ত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে।

ক্রেমলিন বলেছে, গত জুনেই প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার উচ্চাশা বন্ধ করতে হবে। আর চারটি এলাকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে।

গত শুক্রবার জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস প্রায় দুই বছর পর পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তারপরই জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার নেতা একঘরে হয়ে ছিলেন। এই ফোনের ফলে তার সেই দশা কিছুটা হলেও কমলো। জেলেনস্কি সবাইকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, প্রকৃত শান্তি দরকার। কিন্তু এক হাজার দিন পরেও প্রশ্ন হলো, সেই শান্তি কীভাবে আসবে?

জার্মানি সিদ্ধান্ত বদলাবে না

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হচ্ছে না। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত বদল করছে না জার্মানি। ব্রাজিলে জি২০ শীর্ষবৈঠকের সাইডলাইনে শলৎস জানিয়েছেন, জার্মানি মনে করে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো দরকার। কিন্তু তারা বিচক্ষণতার সঙ্গে সেই কাজ করতে চায়।

শলৎস বলেছেন, আমরা এখনও পর্যন্ত যে অস্ত্র দিয়েছি, তা রাশিয়ার গভীরে গিয়ে আঘাত করতে পারবে না।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন যুদ্ধ


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম