শলৎজ-পুতিন ফোনালাপ: তীব্র ভাষায় সমালোচনা জেলেনস্কির
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ পিএম
তীব্র বৈরিতা সত্ত্বেও প্রায় দু বছর পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফােন করে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী কথা বলেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। এতে পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এতে বেজায় নাখোশ ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলােদিমির জেলেনস্কি। এই ফোনালাপের তীব্র ভাষায় সমালোচনায় করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, শলৎজ ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দিয়েছেন। আর এটাই নাকি চেয়ে এসেছেন পুতিন।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান সম্পর্কে বলেছেন, ‘পুতিন দীর্ঘকাল ধরে এটিই চাইছিলেন। রাশিয়া এবং পুতিনকে কোণঠাসা করে রাখার এতোদিনের যা ফল, তা ভেস্তে যাওয়ার জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
প্রসঙ্গত, দুবছর পরে এই প্রথম পুতিন ও জার্মান চ্যান্সেলরের মধ্যে কোনও কথোপকথন হল। যদিও ফোনালাপে শলৎজ জানিয়ে দিয়েছেন, যতদিন প্রয়োজন ততদিন রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক লড়াইয়ে ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য জার্মানির অটল দৃঢ় সংকল্প রয়েছে।
জার্মানির এমন সমর্থনের পরও খুশি নন জেলেনস্কি। তার মতে, পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো মানে হেরে যাওয়া। লড়াইয়ে পেরে উঠতে না পেরে আত্মসমর্পণ করা।
গত প্রায় তিন বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অবাধ সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেয়ে আসছে ইউক্রেন। আর যুদ্ধ বন্ধ হলে, এটি অতিদ্রুত থেমে যাবে।
৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কারণ নির্বাচনের আগে থেকে ট্রাম্প বলে এসেছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ইউক্রেন যুদ্ধ করবেন।
মনে করা হচ্ছে, রাশিয়ার স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই ইউক্রেনকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ প্রয়োগ করবে ট্রাম্প প্রশাসন। আর এতে অসন্তোষ রয়েছে জেলেনস্কির। এবার জার্মানির চ্যান্সেলর ও পুতিনের কথোপকথন নিয়ে তৈরি হল নয়া জল্পনা।
এদিকে ক্রেমলিন জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে ফোনের কথা নিশ্চিত করে বলেছে , বার্লিনের অনুরোধে এই পুতিন-শলৎজের ফোনালাপটি হয়। পুতিন শলৎজকে জানান, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার ব্যাপারে যেকোনও চুক্তিতে রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থের বিষয়টিকে আমলে নিতে হবে এবং তাতে নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতার প্রতিফলন থাকতে হবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, গভীর মতানৈক্য সত্ত্বেও, দুই নেতার মধ্যে যে ফোনালাপ হয়েছে সেটাই খুব ইতিবাচক বিষয়।