হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অভিযোগ
গাজায় ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৫ পিএম

এবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান চালানোর অভিযোগ তুলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, গাজার বাসিন্দাদের ইসরাইলের ধারাবাহিক স্থানান্তরের নির্দেশগুলো ‘জোরপূর্বক স্থানান্তরের যুদ্ধাপরাধ’ এবং নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে ‘জাতিগত নির্মূল’ কার্যক্রমের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে।
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্থানান্তরের যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও যেসব অঞ্চলে ফিলিস্তিনিরা আর ফিরে যেতে পারবে না, সেসব এলাকার ক্ষেত্রে ইসরাইলের পদক্ষেপগুলো জাতিগত নির্মূলের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে’।
এইচআরডাব্লিউ গবেষক নাদিয়া হার্ডম্যান জানান, ১৭২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের এই অনুসন্ধানগুলো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের সাক্ষাৎকার, স্যাটেলাইট ইমেজ এবং ২০২৪-এর আগস্ট পর্যন্ত জনসাধারণের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
যদিও ইসরাইল সরকার দাবি করে যে, বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা ও সামরিক নিরাপত্তার প্রয়োজনেই এই স্থানান্তর ঘটানো হচ্ছে।
তবে হার্ডম্যান বলেন, ‘ইসরাইল স্রেফ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতিকে সাধারণ মানুষের স্থানান্তরের যৌক্তিকতা হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন তো সম্পূর্ণরূপে মেনে চলার জন্যই। তাই এর প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, বেসামরিক জনগণের স্থানান্তরই একমাত্র বিকল্প ছিল’।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ইসরাইলি সামরিক অভিযানে গাজায় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগে এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল ২৪ লাখ।
অন্যদিকে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় এ পর্যন্ত ৪৩,৭৩০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১০৩,২৫৮ জন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এ বিষয়ে এইচআরডাব্লিউ’র মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের মুখপাত্র আহমেদ বেনচেমসি বলেন, ‘বিস্তৃতভাবে গাজার বড় অংশকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা, কিছু ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে জাতিগত নির্মূলের সমতুল্য’।
বিশেষ করে প্রতিবেদনে মিশর সীমান্ত বরাবর ফিলাডেলফি এবং পূর্ব-পশ্চিমে নেটজারিম করিডোরগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যা ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দ্বারা সুরক্ষা অঞ্চলে রূপান্তর করা হয়েছে। সূত্র: এএফপি