ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় বিয়েতে ‘না’ মার্কিন নারীদের
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পিএম
মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মার্কিন নারীর মধ্যে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, ট্রাম্পকে জিতিয়েছেন পুরুষরা এবং এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য তারা শুরু করেছেন এক নতুন আন্দোলন। নাম ৪বি আন্দোলন।
এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হল পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, সম্পর্ক বা বিয়েতে ‘না’ বলা এবং সন্তানের জন্ম দেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। আন্দোলনকারীরা বিশ্বাস করেন, পুরুষতন্ত্রের দ্বারা শাসিত সমাজে নারীদের স্বাধীনতা এবং অধিকার যেন ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে এবং তারা এই অবস্থা পরিবর্তন করতে চান। খবর আলজাজিরার।
যুক্তরাষ্ট্রে আড়াইশ বছরের ইতিহাসে কোনো নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। এবার কমলা হ্যারিসকে নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছিল দেশটির নারীরা। কিন্তু সেই প্রতীতী আর পূরণ হলো কই?
নারীদের ৪বি আন্দোলনের মূল স্লোগান হলো- ‘বয়কটিং বয়’, অর্থাৎ পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, বিয়েটা পরিত্যাগ করার পাশাপাশি সন্তান ধারণের বিরোধিতা করা। আন্দোলনকারীদের মতে, পুরুষদের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব নারীদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং এর বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে তারা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার।
৪বি আন্দোলনের জন্ম দক্ষিণ কোরিয়ায়। ‘মিটু’ আন্দোলনের পর সেদেশে দেখা গিয়েছিল এহেন আন্দোলন। ২০২১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়ল দাবি করেন, এই আন্দোলনের জেরে নরনারীর ‘সুস্থ’ সম্পর্ক বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সেদেশের জন্মহার কমে যাওয়ায় প্রমাণিত, প্রেসিডেন্টের দাবি কতটা নির্ভুল ছিল। আর সেই আন্দোলন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রেও একই ধরনের প্রতিবাদে শামিল মার্কিন নারীদের একাংশ।
কমলা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইতিহাস তৈরি হত। প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পেত যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ভারতীয়-আফ্রিকান বংশোদ্ভূত প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাস রচনা করা হলো না তার। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। ম্যাজিক ফিগার ২৭০ টপকে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৯৫টি, সেখানে কমলাকে থামতে হয়েছে ২২৬-এ। এই হারে বেজায় চটেছেন মার্কিন নারীদের একাংশ। তাদের দাবি, এবারের নির্বাচনের ফলাফল বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের মতামত কোনো গুরুত্বই পায় না। এক্স হ্যান্ডলে এক আন্দোলনকারীর দাবি, ‘নিজেদের শরীরটা পুরুষকে দেওয়াটা আমাদের সিদ্ধান্ত। আমরা এটায় রাজি হব না।’
যদিও এই আন্দোলনের বিরোধিতায় আবার শামিল হয়েছেন নারীদেরই একাংশ। এক নেটিজেন মার্কিন নারীকে এক্স হ্যান্ডলে লিখতে দেখা গিয়েছে, ‘একজন পুরুষও আপনাদের সঙ্গে শুতে না পেরে নিজেদের ঘুম বিসর্জন দেবেন না। একজনও নয়।’ একে নেহাতই সোশাল মিডিয়ার ট্রেন্ড বলে দাবি করছেন তারা।