Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

শেষ মুহূর্তে ছুটছেন দোদুল্যমান রাজ্যে

তরুণদের ভোটে চোখ কমলার, ট্রাম্পের ‘আমেরিকান ড্রিম’

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম

তরুণদের ভোটে চোখ কমলার, ট্রাম্পের ‘আমেরিকান ড্রিম’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় দক্ষিণ-পূর্বের ব্যাটলগ্রাউন্ডখ্যাত উত্তর ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যে শনিবার সকাল থেকে প্রচারাভিযান চালান রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। 

দুই প্রার্থীই চতুর্থবারের মতো একইদিন একই অঙ্গরাজ্যে প্রচারে অংশ নেন। এর মাধ্যমে দুজনের কাছেই দোদুল্যমান এ অঙ্গরাজ্যের গুরুত্বের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। 

একদিকে তরুণ ভোটারদের ভোট দিতে আবেগঘন আহ্বান জানিয়েছেন কমলা। অন্যদিকে ট্রাম্প ভোটারদের দিয়েছেন ‘আমেরিকান ড্রিম’ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। খবর রয়টার্স, বিবিসি ও আল জাজিরার।

৫ নভেম্বর নির্বাচনের দিন অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে ভোটকেন্দ্র খুলবে স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র একাধিক ‘টাইম জোনে’ বিভক্ত হওয়ায় সময়ের এমন পার্থক্যে ভোটকেন্দ্র খোলা হবে। একইভাবে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভোট শেষ হওয়ার সময়ও ভিন্ন হবে। তবে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হবে স্থানীয় সময় রাত ৯টার (বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোর ৪টা থেকে রাত ১০টার) মধ্যে। ভোটকেন্দ্র প্রথম বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভোট গণনার কাজ শুরু হবে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই ফলাফল আসতে শুরু করবে।

নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই যদি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, অর্থাৎ প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী যদি ২৬৯-২৬৯ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পান, সেক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘প্রতিনিধি পরিষদ’ ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। এ পদ্ধতি ‘কন্টিনজেন্ট ইলেকশন’ নামে পরিচিত।

এবারের নির্বাচনে ৭টি সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব অঙ্গরাজ্য হলো- পেনসিলভানিয়া (১৯ ইলেক্টোরাল ভোট), নর্থ ক্যারোলিনা (১৬), জর্জিয়া (১৬), মিশিগান (১৫), অ্যারিজোনা (১১), উইসকনসিন (১০) ও নেভাদা (৬)। 

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে মোট ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট রয়েছে ৯৩টি। নির্বাচনে জিততে হলে একজন প্রার্থীকে মোট ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি পেতে হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এ মহারণের শেষ মুহূর্তে দুই প্রার্থীই দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য নিয়ে বেশি চিন্তিত। তাই দুজনই একইদিন চতুর্থবারের মতো শনিবার উত্তর ক্যারোলিনায় সমাবেশ করেছেন। 

শনিবার কমলা হ্যারিসের নর্থ ক্যারোলিনার চার্লট শহরে সমাবেশে তরুণ ভোটারদের ভোট দিতে আবেগঘন আবেদন জানান। কমলা বলেন, যে তরুণরা প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন, আমি প্রতিদিনই তাদের চোখে আমেরিকার প্রতিশ্রুতি দেখি। তোমরা অস্ত্র, সহিংসতা, জলবায়ু সংকট থেকে মুক্ত থেকে নতুন পৃথিবী গড়তে চাও। 

একই সঙ্গে তিনি ট্রাম্পকেও তীব্র আক্রমণ করে বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট কেবল নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত। ভবিষ্যতের জন্য কোনো সমন্বিত পরিকল্পনা তার নেই। 

কমলা বলেন, তিনি (ট্রাম্প) যদি নির্বাচিত হন, তাহলে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই তিনি শত্রু তালিকা কমাতে শুরু করবেন। আর যদি আমি নির্বাচিত হই, তাহলে আপনাদের একজন হয়ে কর্তব্যের তালিকা ধরে কাজ করব। 

নর্থ ক্যারোলিনার জনসভা শেষে কমলার মিশিগানের ডেট্রয়েটে জনসভা করার কথা ছিল। কিন্তু সেখানকার নির্বাচনি প্রচার ফেলে অপ্রত্যাশিতভাবে তিনি নিউইয়র্কে যান। শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি এনবিসির জনপ্রিয় কমেডি শো ‘সাটারডে নাইট লাইভ’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। 

ওই অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী মায়া রুডলফের বিপরীতে কমলাকে নিজের চরিত্রেই অভিনয় করতে দেখা গেছে। এ সময় তিনি নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রকে শান্ত রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে মায়া রুডলফের বিপরীতে কমলাকে একটি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। একই ধরনের কালো স্যুট ও মুক্তোর মালা পরে দুজনেই হ্যারিসের প্রথম নাম নিয়ে মজার ছলে নানা কথা বলেন। 

এই শোতে এটি ছিল হ্যারিসের প্রথম উপস্থিতি। শেষ পর্যায়ের প্রচারের অংশ হিসাবে কমলা হ্যারিস স্থানীয় সময় রোববার ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ খ্যাত মিশিগানে সমাবেশ করবেন এবং সোমবার পেনসিলভানিয়ায় সমাবেশ করবেন। 

এদিকে শনিবার নর্থ ক্যারোলিনায় ও গ্রিনসবোরোতে নির্বাচনি সমাবেশ করেন ট্রাম্প। ৯০ মিনিটের বক্তব্যে কমলা হ্যারিসকে মিথ্যাবাদী ও ভুয়া খবরের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। যে কোনো দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবেশ করার দাবি করে ট্রাম্প ভোটারদের ‘আমেরিকান ড্রিম’ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। 

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ‘অধিকৃত দেশ’ হিসাবে উল্লেখ করে মঙ্গলবারের নির্বাচনের দিনকে ‘আমেরিকায় মুক্তি দিবস’ হিসাবে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। 

তিনি বলেন, আমি আমেরিকার জনগণের জন্যই আমেরিকান কমিউনিটি রাখব। আমাদের কমিউনিটিতে কেবল আমরা আমেরিকানরাই থাকব। 

ট্রাম্প বলেন, আমাদের সীমান্ত তুলে দেওয়ার মাধ্যমে ভেনিজুয়েলা থেকে কঙ্গো পর্যন্ত সারা বিশ্বের কারাগার ও মানসিক আশ্রয়কেন্দ্রের দাগি আসামি, অপরাধী, সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার সুযোগ করে দিয়ে কমলা হ্যারিস শপথভঙ্গ করেছেন। 

এদিকে শেষ পর্যায়ের প্রচারের অংশ হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনার কিনস্টনে সমাবেশ করবেন। এছাড়া সোমবার নর্থ ক্যারোলিনার রাজধানী শহর রালেইগে সমাবেশ করবেন ট্রাম্প। 

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৪


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics
wholesaleclub

img img
Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম