Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ধারণা দিলেন অমর্ত্য সেন

বেঁচে থাকলে মোদির বিজেপিকে কীভাবে দেখতেন রবীন্দ্রনাথ

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম

বেঁচে থাকলে মোদির বিজেপিকে কীভাবে দেখতেন রবীন্দ্রনাথ

হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজনীতি সারা বিশ্বেই ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার দোহাই দিয়ে কর্তৃত্ববাদের রমরমা চলছে। চলছে সংখ্যালঘু নিপীড়নও। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে নরেন্দ্র মোদির এই বিজেপি সরকার নিয়ে কী বলতেন? সেই প্রশ্নে একটি ধারণা দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকালে ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরা ওয়াশিংটন ডিসি মেট্রো বা প্রবাসী ভারতীয়দের সমিতি ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা ও রাজনীতি, ১৯২৪-৪১’ শীর্ষক বক্তৃতার আয়োজন করেছিল। সে অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ সুগত বসু। সেখানে দীর্ঘ বক্তব্য দেন অমর্ত্য সেনও।

প্রশ্নোত্তর পর্বে রবীন্দ্রনাথ ও আজকের হিন্দুত্ববাদ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রধান বক্তা সুগত বসুকেই। তবে তিনি অমর্ত্য সেনকেই জবাবটা দেওয়ার অনুরোধ জানান।

জীবৎকালে বিজেপির সমমনা ভারতীয় হিন্দু মহাসভার প্রতি রবীন্দ্রনাথের বিরাগের কথাই উল্লেখ করেন অমর্ত্য। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের ঘরে-বাইরে (উপন্যাস) মনে থাকলে স্পষ্ট বোঝা যায়, সংখ্যাগুরুর স্বৈরাচার রবীন্দ্রনাথের তীব্র ভাবে অপছন্দ ছিল।’

সুগত বসুও ব্রিটিশ ভারতে হিন্দু, মুসলিম সংঘাত নিয়ে রবীন্দ্রনাথের অবস্থান প্রসঙ্গে ঘরে-বাইরে–এর কথাই বলেছেন। তাঁর উপন্যাসে স্বদেশি আন্দোলনের নামে গরিব মুসলিম চাষি, দোকানদারদের ওপর জুলুমের কড়া সমালোচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বিশ্বকবির ভারত ভাবনার পেছনেও ‘জনগণমন অধিনায়ক’ গানটির দ্বিতীয় স্তবকের ভাবনা উল্লেখ করেন সুগত। সেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসিক, মুসলমান, খ্রিষ্টান নিয়ে পূর্ব–পশ্চিমের সংহতির কথাই বলেছেন কবি।

মূল আলোচনায় সুগত বসু রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন দেশ সফর, লেখালিখি এবং সমকালীন রাজনীতির মধ্যকার সম্পর্ক ও সমন্বয়ের কথা বলেছেন। ১৯২৪–২৫ সালে রবীন্দ্রনাথ চীন, জাপান এবং পরে আর্জেন্টিনা সফর করেন। নিজস্ব এক অধ্যাত্মচেতনার বন্ধনে তিনি এশীয় ঐক্যের স্বপ্ন দেখেছেন। সুগত বলেন, চীনের মানুষ সেই রবীন্দ্র আধ্যাত্মিকতাকে পুরোটা বোঝেনি। ১৯২৪–এর আধ্যাত্মিকতা থেকে ১৯৩০–এর দশকের পরিশেষ কাব্যে রবীন্দ্রনাথ ‘প্রশ্ন’ কবিতায় সেই তিক্ত জীবনবোধ প্রকাশিত।

অমর্ত্য সেনও রবীন্দ্রনাথের রাশিয়ার চিঠি এবং সভ্যতার সংকটে সমকালের রবীন্দ্রচেতনার কথা বলেন। গান্ধীর সঙ্গে নানা মতবিরোধ সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথের পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক উঠে আসে। আর শেষ জীবনে রবীন্দ্রনাথের মধ্যেও সুভাষচন্দ্র বসুকে দেখে দেশের রাজনীতি নিয়ে তৎপর হওয়ার কথা বলেন সুগত। তখন সুভাষকে ‘দেশনায়ক’ বলে বরণ করেছেন কবি। দেশের যুদ্ধে শরিক হতে না পারার আক্ষেপও করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম