লেবাননের মানবিক পরিস্থিতি ২০০৬ সালের যুদ্ধের চেয়ে ভয়াবহ: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ এএম

জাতিসংঘের ত্রাণ এবং মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ২০০৬ সালে ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যকার যুদ্ধের চেয়ে লেবাননের বর্তমান মানবিক পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। ওই সময় সাধারণ মানুষের যা দুর্ভোগ হয়েছিল, বর্তমান অবস্থা তা ছাড়িয়ে গেছে।
রবিবার (৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটিতে ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২ হাজার ৯৬৮ জন জানিয়েছে। একইসঙ্গে এসব হামলায় আহত হয়েছে আরও ১৩ হাজার ৩১৯ জন।
লেবানন কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত ইসরাইলি আগ্রাসনে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন বলছে, তাদের তথ্য বলছে অন্তত সাড়ে ৮ লাখ মানুষজন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি অনুসারে, ২০০৬ সালের ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধে লেবাননে ১ হাজার, ১৯১ জন নিহত হয়। ওই সময়, ৯ লাখের এরও বেশি মানুষ বাস্তচ্যুত হয়।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ওমর আশর এক নিবন্ধে লিখেছেন, ২০০৬ সালের হিজবুল্লাহ আর ২০২৪ সালের হিজবুল্লাহ শক্তিমত্তার দিক থেকে এক নয়। হিজবুল্লাহর এখনকার সামরিক সক্ষমতা যেকোনো বিশাল আকারের অ-রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও অনেক রাষ্ট্রীয় বাহিনীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
হিজবুল্লাহর সামরিক শক্তির মূল ভিত্তি মূলত স্থলবাহিনী। যোদ্ধা ও মজুত বাহিনীসহ হিজবুল্লাহর মোট সেনাসংখ্যা এক লাখের বেশি।
হিজবুল্লাহ বাহিনীর শক্তির মূল ভিত্তি রাদওয়ান ফোর্স। এই অভিজাত ইউনিটের জনবল দুই হাজার থেকে তিন হাজার। রাদওয়ান ফোর্সের সেনাদের স্নাইপিং অভিযান, বৈরী পরিবেশে যুদ্ধ এবং শত্রুশিবিরে ঢুকে অভিযান পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তার মতে, ২০০৬ সালের এই যুদ্ধের ফলাফল ড্র হয়। ১৯৪৮ সালের পর কোনো আরব বাহিনী ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে এতটা সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।
এদিকে ওসিএইচএ তাদের বিবৃতিতে আরো জানিয়েছে, লেবাননের পূর্ব বালবেক এবং দক্ষিণ নাবাতিয়ের বাসিন্দাদের জন্য ইসরাইলের জোরপূর্বক সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবাসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।