
প্রিন্ট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৩ এএম
লেবাননে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৯ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল উপেদেষ্টা আমোস হোচস্টেইন
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এবং লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে শত্রুতা কমানোর প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা। যা ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শুরু হবে বলে জানিয়েছে দুটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।
বুধবার আল-আরাবিয়্যার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে সূত্রগুলোর একজন যিনি আলোচনা সম্পর্কে ব্রিফ করেছেন এবং অপরজন লেবাননের একজন উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সময়কালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রণীত রেজুলেশন ১৭০১ সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করার জন্য কাজ করা হবে। ২০০৬ সালে গৃহীত এই রেজুলেশনটি দক্ষিণ লেবাননকে এর বাইরের দেশের অস্ত্র আমদানি থেকে মুক্ত রাখার জন্য প্রণীত হয়।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য আল-আরাবিয়্যার পক্ষ থেকে লেবাননে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল উপেদেষ্টা আমোস হোচস্টেইন অক্টোবরের শুরুতে বৈরুতে সাংবাদিকদের জানান, রেজুলেশনটি কার্যকর করার জন্য আরও ভালো ব্যবস্থা প্রয়োজন। কারণ ইসরাইল বা লেবানন- কেউই রেজুলেশনটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি।
সূত্র অনুযায়ী, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি একটি পূর্ববর্তী প্রস্তাবের পরিবর্তে এসেছে, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো গত মাসে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল। আর এটি ছিল রেজুলেশন ১৭০১-এর পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য প্রথম একটি প্রস্তাব।
তবে উভয় পক্ষই সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই চুক্তিটি এখনও ভেঙে যেতে পারে।
এ বিষয়ে লেবাননের একজন উচ্চপদস্থ কূটনীতিক বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আন্তরিক প্রচেষ্টা চলছে। তবে এটি বাস্তবায়ন এখনো বেশ কঠিন।
সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, ইসরাইল এখনও এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে ‘সরাসরি বাস্তবায়ন’ করার সুযোগের জন্য চাপ দিচ্ছে। তারা বলছে, হিজবুল্লাহ যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে, তাহলে তাদের ওপর বিমান হামলা বা অন্যান্য সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমতি দিতে হবে।
ইসরাইলের একটি টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে, ইসরাইল রেজুলেশন ১৭০১-এর একটি শক্তিশালী সংস্করণ চাইছে, যাতে ইসরাইল তাদের নিরাপত্তা সংকট অনুভব করলে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
লেবানিজ কর্মকর্তারা জানান, লেবানন সরকার বা হিজবুল্লাহ এখনও এই প্রস্তাব সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত হয়নি এবং তারা তাদেরকে বিস্তারিতও জানাতে পারছে না।
লেবাননে যুদ্ধবিরতির জন্য এই চাপের বিষয়টি এমন এক সময়ে সামনে আসছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচন একেবারেই দ্বারপ্রান্তে। এমন অবস্থায় গাজায়ও একইরকম কূটনৈতিক উদ্যোগ চলছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এ নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দুজন প্রেসিডেনশিয়াল উপদেষ্টা হোচস্টেইন এবং ব্রেট ম্যাকগার্ক বৃহস্পতিবার ইসরাইলে পৌঁছাবেন। যাতে তারা লেবাননে যুদ্ধবিরতির জন্য চুক্তি সম্পন্ন করতে সহায়তা করতে পারেন।
হোচস্টেইন এবং ম্যাকগার্ক এ সফরে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং কৌশলগত বিষয়ের মন্ত্রী রন ডারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।
ইসরাইল এবং মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করছেন, হিজবুল্লাহ অবশেষে গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে নিজেদের যোগাযোগ ও সমর্থন বিচ্ছিন্ন করতে প্রস্তুত হয়েছে। যেহেতু গত দুই মাসে লেবানিজ গোষ্ঠীটি কিছু মারাত্মক ধরণের আঘাতের সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে তাদের নেতা হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুও রয়েছে।
ঘটনাপ্রবাহ: লেবানন ইসরাইল সংঘাত
আরও পড়ুন