Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ফ্রান্স-২০২৫ নতুন অভিবাসন আইনে যা থাকছে

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম

ফ্রান্স-২০২৫ নতুন অভিবাসন আইনে যা থাকছে

আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে ফ্রান্সে একটি নতুন অভিবাসন আইনের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের নতুন জোট সরকার৷ বিশেষ করে নতুন আইনে ‘বিপজ্জনক’ বলে বিবেচিত অনিয়মিত বিদেশিদের প্রশাসনিক আটকের মেয়াদ বাড়াতে চায় সরকার৷

রোববার (১২ অক্টোবর) সরকারের মুখপাত্র মউদ ব্রোজেওঁ বেসরকারি টিভি চ্যানেল বিএফএম টিভিতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নতুন অভিবাসন আইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ 

এর আগে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি একটি অভিবাসন আইন পাস করেছিল ফ্রান্সের আগের সরকার৷ অর্থাৎ মাত্র ১০ মাসের মাথায় আরেকটি আইনের ঘোষণা আসল৷ 

ফ্রান্সের নতুন মধ্য-ডান সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, প্রশাসনিক আটক কেন্দ্রে অভিবাসীদের আটকের সর্বোচ্চ সময়কাল ৯০ থেকে ২৩০ দিন করা৷ যেটি বর্তমানে শুধুমাত্র সন্ত্রাসী হিসাবে বিবেচিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই সম্ভব৷

সরকারের মুখপাত্র আরও বলেন, আমরা অন্য বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কেও চিন্তা করছি৷ ফরাসিদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নিয়ে ‘ট্যাবু’ থাকা উচিত নয়৷

নতুন সরকার এই বিলটি ২০২৫ সালের প্রথম দিকে সংসদে তুলতে চায়৷ 

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পাস হওয়া আইন নিয়ে অবশ্য সংসদে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর জোটের সাথে বাম ও ডান জোটের দলগুলোর তীব্র বিতর্ক হয়েছিল৷ 

ওই সময়ে কট্টর ডান ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) সংসদে ভোট দানে অনুপস্থিত থাকায় বিলটি পাস করতে পেরেছিল প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর জোট৷ 

যদিও বর্তমানে বিলের একটি কট্টর সংযোজনের অনুমতি দিয়েছিল ফরাসি সংসদের উচ্চ কক্ষ সিনেট৷ শেষ পর্যন্ত ফরাসি সাংবিধানিক কাউন্সিল ৩৫টি ধারা বাতিল করে দিয়েছিল৷ 

সিনেটের ওই সময়ের ডানপন্থি রিপাবলিকান (এলআর) দলের প্রেসিডেন্ট ব্রুনো রোতাইয়ো বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন৷ 

আগের আইনের ‘সেন্সর’ পাওয়া ধারাগুলো আবারো আইনে আনতে চান রক্ষণশীল ব্রুনো রোতাইয়ো৷ 

একটি সরকারি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, সাংবিধানিক কাউন্সিলে সেন্সর পাওয়া পদক্ষেপগুলো ‘নতুন অভিবাসন’ আইনের ভিত্তি হিসাবে কাজ করবে। বেশ কিছু বিদ্যমান বিষয় পরিবর্তন এবং সংযোজন করা হতে পারে৷

মউদ ব্রোজেওঁ বিএফএম টিভিকে বলেন, নতুন বিল নিয়ে আমরা সংসদে থাকা সবগুলো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করব৷ আমরা আপাতত ন্যাশনাল র‍্যালি দলের সমর্থন চাইতে যাচ্ছি না৷

যদিও আর এন দলের নেতা মারিন লো পেন অভিবাসন সংক্রান্ত একটি নতুন আইনের অনুপস্থিতিকে ‘রেড জোন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ যেটি শেষ পর্যন্ত সংসদে বর্তমান সরকারকে অনাস্থা প্রস্তাবের দিকে নিয়ে যেতে পারে৷ 

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ডানপন্থি রিপবালিকান দলের সংসদ সদস্যরা প্যারিসে একজন তরুণী খুনের পর অনিয়মিত অভিবাসীদের আটকের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য একটি বিল পেশ করে৷ অতি রক্ষণশীল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো এই বিলের পক্ষে মত দিয়েছিলেন৷ 

ফরাসি সরকারের নতুন অভিবাসন আইনের এই ঘোষণা সংসদে নতুন করে উত্তপ্ত বিতর্কের জন্ম দেবে বলা ধারণা করা হচ্ছে৷ 

যদিও বর্তমানে সংসদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। মিশেল বার্নিয়ের এর নেতৃত্বাধীন জোটকে দুর্বল সরকার হিসেবে দেখছেন বিরোধীরা৷ 

ফরাসি সোশ্যালিস্ট পার্টি (পিএস) এর সেক্রেটারি অলিভিয়ের ফর সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ইনফোকে বলেছেন, ব্রুনো রোতাইয়োর সরকার আমাদেরকে এমন অভিবাসন আইন দিতে চাচ্ছেন যেটি কট্টর ডন আদর্শের লোকেরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন।

আরেক বাম আইন প্রণেতা বঞ্জেমা লুকাস বলেন, এখানে আমরা আবার কট্টর ডানদের প্রচারিত দাবিগুলো নিয়ে বিতর্ক উস্কে দেয়ার দিকে যাচ্ছি৷ এই সরকার এবং যারা এটিকে সমর্থন করে তারা মূলত আগুনে ঘি ঢালছেন এবং মারিন লো পেনের সহযোগী৷

ইকোলজিস্ট এবং সোশ্যাল গ্রুপের সংসদীয় দলের প্রেসিডেন্ট সিরিয়েল শাতেলা বলেন, এটি এমন একটি আইনের ঘোষণা যা কিছুই সমাধান করবে না৷ এসব পদক্ষেপ ইতিমধ্যে অনেক মানুষের জীবন ধ্বংস করেছে৷’

সরকারি আর্কাইভ অনুসারে, ১৯৮০ সাল থেকে এ নিয়ে ফ্রান্সে অভিবাসন এবং বিদেশিদের অধিকার সংক্রান্ত ৩২টি আইন পাস হয়েছে৷

সূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম