‘জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চলছে গণহত্যার মধ্যে আরেকটি গণহত্যা’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১২ পিএম
যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইল বারবার উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। মাত্র দেড় বর্গকিলোমিটারেরও কম আয়তনের এই শিবিরে ১ লাখ ১৬ হাজারের মতো নিবন্ধিত শরণার্থী বাস করেন। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে সবকিছু বিচ্ছিন্ন করে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল।
ইসরাইলের এমন আচরণকে গণহত্যার মধ্যে আরো একটি গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের উপ-স্থায়ী পর্যবেক্ষক মাজেদ বাম্যা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে সামাজিক মাধ্যম এক্সে এই মন্তব্য করেন তিনি। ফিলিস্তিনি দূত লিখেন, ‘উত্তর গাজায় এখন যা ঘটছে তা গণহত্যার মধ্যে একটি গণহত্যা’।
গাজা উপত্যকায় বড় যে আটটি শরণার্থীশিবির রয়েছে, তার একটি জাবালিয়া। বলা হচ্ছে, গাজার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি এটি। আর এমন জায়গায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দুই হাজার পাউন্ড ওজনের বোমাও ব্যবহার করেছে ইসরাইল।
ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, সেখানে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তা রুখতেই এই হামলা করা হচ্ছে। সবশেষ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে হামলা চালিয়ে সেখানে অন্তত ২২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরাইল।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা শনিবার জানিয়েছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান শুক্রবার রাতে জাবালিয়ায় একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে বোমাবর্ষণ করেছে। চারটি আবাসিক ভবনে হামলায় ২২ জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। আরও ‘৪ জন নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে, তারা ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছেন।
আল জাজিরা বলছে, আকারে সবচেয়ে বড় ও সর্বাধিক বিধ্বংসী বোমাগুলো একটি এটি। এই বোমার আঘাতে ৪০ ফুটের বেশি বড় গর্তের সৃষ্টি হতে পারে। জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরের খুব বেশি কিছু এখন আর অবশিষ্ট নেই। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কারণে সাড়ে সাত লাখের বেশি ফিলিস্তিনি গৃহহীন হলে ১৯৪৮ সালে এই শরণার্থীশিবির গড়ে তোলা হয়।
এদিকে লেবাননে হামাসের প্রতিনিধি ওসামা হামদান আল জাজিরাকে বলেছেন, ইসরাইল ‘১০ দিনের জন্য উত্তর গাজায় খাদ্য সরবরাহের প্রবেশে বাধা দিয়েছে’। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন হামাসের এই কর্মকর্তা।
গাজায় এক বছরের যুদ্ধে ৪১ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছেন ইসরাইলি সেনারা। আহত হয়েছেন আরও প্রায় এক লাখ মানুষ। সহসাই এই যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণও নেই।